শুক্রবার রাতে ইউক্রেনে ৫০৩ হামলা রাশিয়ার, নিহত ১১

শুক্রবার গভীর রাতে ইউক্রেনে ৫০৩টি হামলা পরিচালনা করে রাশিয়া। এসব হামলায় ১১ জন নিহত হয়েছে বলে জানিয়েছে স্থানীয় কর্তৃপক্ষ।

রাতভর আকাশ, স্থল ও সমুদ্রপথে রাশিয়া ৫০৩টি হামলা চালায়। এর মধ্যে ছিল ৪৫টি ক্ষেপণাস্ত্র ও ৪৫৮টি ড্রোন। দেশটির বিমান প্রতিরক্ষা বাহিনী ৪০৬টি ড্রোন ধ্বংস করতে সক্ষম হলেও ৯টি ক্ষেপণাস্ত্র প্রতিহত করা যায়।

বেশির ভাগ ক্ষেপণাস্ত্র লক্ষ্যবস্তুতে আঘাত হানে। ফলে একাধিক অঞ্চলে বিদ্যুৎ সরবরাহ বন্ধ হয়ে যায়। হামলার মূল লক্ষ্য ছিল গ্যাস ও বিদ্যুৎকেন্দ্রসহ গুরুত্বপূর্ণ জ্বালানি অবকাঠামো। রাজধানী কিয়েভসহ একাধিক এলাকায় ব্ল্যাকআউট দেখা দেয়।

দক্ষিণ-পূর্বাঞ্চলীয় জাপোরিঝিয়া প্রদেশে গভর্নর ইভান ফেদোরভ বলেন, “রাশিয়ার হামলায় তিনজন নিহত ও ছয়জন আহত হয়েছেন। একাধিক আবাসিক ভবন ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। দোনেৎস্কের দুই জেলায় আরও দুজন নিহত হয়েছে।”

খেরসনের গভর্নর ওলেক্সান্দর প্রোকুদিন বলেন, “খেরসনের বহুতলা ভবন, বাড়িঘর ও গাড়িতে হামলায় দুজন নিহত ও ১০ জন আহত হয়েছে।”

কিয়েভের গভর্নর মাইকোলা কালাশনিক বলেন, “ভিশহোরদ জেলায় হামলায় এক নারী আহত হয়েছে। ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে বেসামরিক এলাকা ও বিদ্যুৎ অবকাঠামো। পূর্বাঞ্চলীয় দিনিপ্রো অঞ্চলে এক ভবনে ক্ষেপণাস্ত্র আঘাতে তিনজন নিহত ও ১১ জন আহত হয়েছে, যাদের মধ্যে শিশুও রয়েছে।”

পলতাভা অঞ্চলের গভর্নর ভলোদিমির কোহুত বলেন, “সেখানে বৃহৎ মাত্রার হামলা হয়েছে। একজন আহত হয়েছে এবং বিদ্যুৎ সরবরাহ বিঘ্নিত হওয়ায় রোলিং ব্ল্যাকআউট চালু করা হয়েছে।”

প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কি ইউরোপীয় ইউনিয়নের কাছে আহ্বান জানিয়েছেন, শীত আসার আগেই রাশিয়ার ওপর নতুন নিষেধাজ্ঞা আরোপ ও দেশটির সম্পদ জব্দ করার।

তিনি বলেন, “রাশিয়ার হামলাগুলো দেখিয়ে দিচ্ছে, চাপ আরও বাড়াতে হবে। রুশ পারমাণবিক খাত এখনো নিষেধাজ্ঞার বাইরে, তাদের সামরিক শিল্প পশ্চিমা ইলেকট্রনিক্স পাচ্ছে, তেল ও গ্যাস বাণিজ্যেও আরও কড়াকড়ি দরকার।”

রুশ প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, তারা আকাশ, স্থল ও সমুদ্রপথ থেকে উচ্চনির্ভুল দূরপাল্লার অস্ত্র ব্যবহার করে ব্যাপক হামলা চালিয়েছে, যার মধ্যে হাইপারসনিক ব্যালিস্টিক ক্ষেপণাস্ত্রও ছিল।

দেশটির সেনাপ্রধান ওলেক্সান্দর সিরস্কি বলেন, “দোনেৎস্কের ফ্রন্টলাইনের শহর পোকরোভস্কে এখনো তীব্র লড়াই চলছে। শহরটির দখল নিতে সেখানে বিপুলসংখ্যক রুশ সেনা সমবেত হয়েছে। ইউক্রেনীয় সেনারা শহরের পূর্বাংশে পাল্টা হামলা চালাচ্ছে।”

পূর্ব ইউরোপে শীত ঘনিয়ে আসার সঙ্গে সঙ্গে রাশিয়ার এমন ধারাবাহিক হামলায় ইউক্রেনজুড়ে উদ্বেগ ও মানবিক সংকট আরও বাড়ছে। সূত্র: আল জাজিরা