সজীব দে’র দুটি খুদে গল্প

প্রকাশিত : সেপ্টেম্বর ১৩, ২০২৩

অনির্বাণ


নো এক সময়ে একটি গ্রামে ছোট একটি ছেলের নাম ছিল অনির্বাণ। অনির্বাণ সব সময় একটি ছোট দাঁত নিয়ে খুব গর্বিত ছিল, এবং সে তা সবার সামনে প্রদর্শন করতে পছন্দ করত। সে আমাদের গ্রামের সবচেয়ে আত্মবিশ্বাসী ছেলে ছিল।

 

একদিন, একটি সাঁওতাল বাজারে গিয়ে অনির্বাণ একটি বাজারঅলার কাছে গিয়ে প্রদর্শন করলো তার ছোট দাঁত। সে বললো, আমার ছোট দাঁতটি সবচেয়ে সুন্দর ও শক্তিশালী।

 

বাজারঅলা একটি উপমা দিলো। সে একটি পাথর নিয়ে অনির্বাণের দাঁতের সাথে তা মিলিয়ে দিলো। এরপর বলল, এই পাথরটি দাঁতটির থেকে শক্তিশালী এবং সুন্দর।

 

অনির্বাণ খুশি হয়ে ঘরে ফিরে এসে দাঁতের সাথে পাথরটি সংযোগ করলো। প্রায় এক মাস পর, অনির্বাণের দাঁত সত্যিই শক্তিশালী ও সুন্দর হয়ে গিয়েছিল।

 

আমাদের আত্মবিশ্বাস মৌলিক। কিন্তু সেটি শাস্ত্রীয় উপায়ে নয়, সে সত্যি প্রাপ্ত অকৌশল ও স্বার্থপরতা দ্বারা নয়। আমাদের আত্মবিশ্বাস অপেক্ষা করে বেড়ে যায় যখন আমরা অন্যদের সাথে সাদামনে ও মানসিকভাবে সম্মান করি।

 

অস্থিমজ্জার এনাটমি

 

পিছনে ফিরে তাকালে কিছু রাস্তা আর ফুল গাছগুলি দেখি। আশ্চর্য, এছাড়া তোমাকে নিয়ে আর কোনো স্মৃতি নাই। কিছু ঘ্রাণ ছড়িয়ে ছিলাম। নিজস্ব ঘাম এখন অপরিচিত লাগে।

 

ঝড় আর অদিতি পাতার ঘ্রাণে লেগে আছে।
পাতারা জানে এবং জেনেছিল আমাদের অস্থিমজ্জার এনাটমি।
এটা একটা ছোট গল্প হতে পারে, জানালো প্রভাত।
আর হাওয়ায় মিলিয়ে গেলো প্রভাত।
ছিল শীতকাল। গায়ে চাঁদর জড়ানো সে হেসে হেসে বলেছিল, কোনো কোনো সন্ধ্যায় জীবনের কোনো স্মৃতি থাকে না।

 

আমি প্রভাতের কথা বিশ্বাস করিনি বলে চুপ করে যাই। তার এরকম চুপ থাকায় আমি ভাবি বস্তুগত দুনিয়ায় আসলে ভাবের কোনো স্থান নেই।
ক্ষণিকের অতিথি শব্দটি আজ আর জীবনের সাথে যায় না বলে হয়তো সে বলেছিল মানুষের কেন স্মৃতি থাকে না।
তাহলে জাদুঘর,মেমোরিয়াল, ছবি লেখা এগুলো তবে কি?
প্রভাত বলেছিল, এসব মানুষের জন্য নয়।
তবে?
মানুষ এসব জমায় নিজেকে আশ্চর্য করার মহিমায়।

 

আদতে বস্তুজগতের কাজে লাগে একমাত্র ফসিল। কার জীবন কেমন সে কী করছে এগুলো ব্যর্থতা ছাড়া আর কিছু না। মানুষ এমন কোন মহান প্রাণী না যে, এই পৃথিবীতে তেমন কোন জরুরি।
একটা ব্যাঙ বা সাপের যেটুকু প্রয়োজন, মানুষও তাই।

 

আমার চোখে সব কিছু হারিয়ে যেতে থাকে।
প্রভাতও তেমন কেউ না।