সজীব দে

সজীব দে

সজীব দে’র ৫ কবিতা

প্রকাশিত : সেপ্টেম্বর ১৬, ২০২১

নন্দিতা অথবা যে কেউ

তোমার ফিরে আসার বদলে রেখে গেলে একটা নরম বিড়াল।

আর
বসে আছি ঠিক তা নয়
                  অনেক সময় ঘুমাচ্ছি
                               ততোধিক সত্যি নয় আমি ভুলে যাচ্ছি
পথ
কয়েকটি পাখি
         এক জোড়া কালো চোখ।
        আর
যে হাতের রেখায় তুমি বদলে গেলে
তখন আমার হাতে ছিল অনধিক
             ক্ষয়ে যাওয়া
                চিৎকার।

তুলি অথবা সিলভিয়া প্লাথ

তুলিকে ধরতে গিয়ে আমাকে খানিকটা ভাবতে হয়
একটা লাইন টানা হবে হাত থেকে মুখের দিকে
আমার তুলি ধরতে গিয়ে কোন রঙ দেব ক্যানভাসে
এটাও মনে করে আমি সর্বশেষ হলুদ ঠিক করে টোন দেই এবং
আপনে যে তুলিকে চেনেন বা জানেন সে আসলে সিলভিয়া প্লাথ।

অনেকে মনে করেছিল ছবিটা দেখে যে তার মুখ নীল হলে
সুন্দর হতো অথচ সবার চিন্তা এবং ইমাজিনেশন ছুড়ে দিয়ে
হলুদকেই পারফেকসনিস্ট মনে করি।

এন্টার দ্য ভয়েড— তাতানিয়া

আমি স্বপ্নের ভেতর দিয়ে গেলেও
বুনো পালকের ঘর রয়ে যায়।
তথাপি আমাদের পারস্পরিক
ঘুম দোলানো ক্যামেরার ফ্রেমে
পেন্ডুলাম এক বিশেষ চরিত্র হয়ে
দৃশ্য তৈরি করে যা আমাদের
অস্তিত্বের কৌণিক অবস্থান
না ছুঁয়ে সোজা হেঁটে চলে
মায়াবি এক শিল্পির নেশাতুর
অর্ধসিদ্ধ নিউরণের সাইটোপ্লাজমে
তখন ভৌতিক ফ্রেমে বাঁধা পড়ে
অতীতের ভাবনা
যা কিছু স্থির
অথবা আলোহীন বারান্দায়
একা বসে থাকে একটি মদের গ্লাস
প্রায় গালিবের স্বপ্ন এমনটাই।
আর
আমি দেখি একটি কচ্ছপ
আমার ঘুমের ভেতর হেঁটে
যায়।
শিয়রের গ্লাসটি ভরে উঠে
অসংখ্য গোল্ডফিসে
আর
বিভ্রম তৈরি হয়
তুমি রান্না করছ সামুদ্রিক টোনা মাছ
এসব দখল হয়ে যাওয়া স্বপ্নগুলো
একবার চুরি হয়ে যায়।
যদিও কেউ একজন দেখে
এক চাবিঅলা তার শরীরজুড়ে
লিখে রেখেছে মৃত স্বপ্নের জলজ বেদনা।
আর
প্রিয় ঝিনুক প্রসব করে আমাদের মরে যাওয়া কল্পনার ডায়লেকটিক প্রতিবেদন
যা
আমাদের অবচেতনের শ্বাসের অস্থিরতা।
নেরুদা যেমন বলে, অবচেতন হলো পাহাড়ি
ঝর্ণা।

শয়তানের সন্তান

কফির মগে
লুকিয়ে যায় সময়
উড়াল পাখি ধরে রাখে মগজ।
এবং
যেসব পাখি খাঁচাবন্দি
তাদের রক্তে মিশে যায়
সংসার
আর মৃত্যুকূপ বলে কিছু নাই এমন ধারণা নিয়ে হাঁটি
যেনবা আণবিক বোমায় ভিয়েতনামি শিশু চিৎকার
দেয় আমরা ইশ্বরের সন্তান নই।
উড়াল পাখি ধরে রাখে
মিজোরামের বিকাল
এমনতর চোরাকারবারী
আফিম ঢেলে মগজে
বেঁচে উঠি কলরব
শেষতক মেনিফেস্টো লেখা হয় ধোঁয়ায় ধোঁয়ায় হাতির চোয়ালে সিংহীর হুংকারে আমরা ইশ্বর মানি না
সাদা কাচের দেয়ালজুড়ে
রক্তমাংস নিয়ে যারা জেগে ওঠে তারা অশরীরী নয়
বরং
শয়তানের সন্তান।

পিয়েতা চলে যাবার পর

 

পিয়েতা চলে যাবার পর খণ্ডিত মস্তকে সোমরসে মাছ সাঁতার কাটবে।
এরপর
এবার তো শুরু হবে
পাহাড়ে যাব
নদীতে ডুবে যাব।
এবার আর বাধা নেই
চোখের পিচুটি রেখে
দেব।
এবার মাথার ভেতর
রং ঢালবো
কোথাও যাব।
এবার তোমাকে ভুলতে হবে
মেপে মেপে
সাদা কালো জীবন মিলাবো।
এবার অন্তর্গত সময়ে যাব
ফিরবো না
তোমার পথে আর না।
এবার পালাবো যতটা পারি
সুরঙ্গ খুঁড়েছি
অতলান্তিক চোখে।

আমি স্বপ্নকে ছুঁড়ে দিয়ে বলছি আমার প্রেমিকার ছায়া আঁকা হয়ে গেছে
অথবা সিগারেটস আফটার সেক্স
বারান্দা
উড়ে আসা ভোর
কফির মগ উল্টে আছে সুন্দরীদের পায়ের কাছে
আমি সদ্য অমরাবতী পেরিয়ে ঘুম ভেঙেছি দূরত্বের
আহ্বান।
ও মান্টো, আজানের সময় একটু সুরা হোক।
ওজুকে দেখছি না আর বরং চিঠিটা পড়ে নগ্ন শাওয়ারে শুয়ে।
আহা, তুমি তো মৃত, তা জানো না!