
চিত্রকর্ম: গোবিন্দ প্রসাদ দেবনাথ
সরকার আবদুল মান্নানের আত্মস্মৃতি ‘আমাদের গ্রাম’
পর্ব ২
প্রকাশিত : অক্টোবর ১৩, ২০২০
গ্রামের নাম জহিরাবাদ। মতলব (উত্তর) উপজেলার একদম পশ্চিম প্রান্তে মেঘনার প্রায় তীরস্থ একটি গ্রাম। দেখতে অনেকটা ১ এর মতো। ১ এর উপরের দিকটা দক্ষিণে এবং নিচের দিকটা বাঁক নিয়ে উত্তরে এসে কিছুটা পূর্ব দিকে চলে গেছে। পুব দিকের ওই লেজটুকুতে কয়েকটি বাড়ি । লেজের গোড়ায় মাঝি বাড়ি। লেজের মধ্যে মিজি বাড়ি, আলদার (হাওলাদার) বাড়ি, সরকার বাড়ি, ছৈয়াল বাড়ি এবং গ্রাম থেকে বিচ্ছিন্ন মুড়া বাড়ি বা পাটোয়ারী বাড়ি। এর মধ্যেই দশ-বারটি পরিবারের ওই যে বিশাল সরকার বাড়ি, হতদরিদ্র পাড়াটির মধ্যে সরকার বাড়ি সবদিক থেকেই বর্ধিষ্ণু, সমৃদ্ধ।
এই গ্রামের পাশ দিয়ে গ্রামের মতোই আঁকাবাঁকা হয়ে চলে গেছে একটি খাল। খালটি মেঘনায় গিয়ে মিশেছে। কিন্তু এর শাখাগুলো খুব যত্নে কোনো গ্রামকে বঞ্চিত না করে প্রতিটি গ্রামের পাশ দিয়ে গিয়ে ফসলের মাঠে মিশেছে। শুধু কি তাই, গ্রামের অসংখ্য পুকুর আর ডোবার সঙ্গেও খালগুলোর চিরকালের সম্পর্ক তৈরি হয়ে আছে। গ্রামীণ জীবনের সঙ্গে জল আর যোগাযোগের এমন নিবিড় সম্পর্ক খালগুলো কী করে তৈরি করেছিল তা আর ভেবে পাই না। আত্মীয়তার একটা বন্ধন থাকে, যোগ থাকে, যোগসূত্র থাকে। কখনো কখনো সেই বন্ধন শিথিল হয়, যোগ এবং যোগসূত্র ছিন্ন হয়। কিন্তু ওই খালগুলো গ্রামীণ জীবনকে আত্মীয়তার যে বন্ধনে জড়িয়ে ছিল তা ছিন্ন হওয়ার কোনো সুযোগ ছিলনা। জন্মের পর থেকে কত বিচিত্র সূত্রে যে খালগুলো আমাদের জীবনের সঙ্গে জড়িয়ে থাকত তার কোনো হিসেব নেই।
এই খালগুলোতে কত রকমের জল ছিল! বর্ষার জল, শরতের জল, হেমন্তের জল, শীতের জল, গ্রীষ্মের জল। ঋতু পরিবর্তন হলো তো খাল পরিবর্তন হবে, খালের জল পরিবর্তন হবে। বর্ষার জল যখন সে ধারণ করত তখন তো চেনাই যায় না তাকে। তখন কী ভাবসাব তার! দেহে তার অফুরন্ত জলের স্রোত। দুই পাড় প্লাবিত করে বিপুল জলের প্রবাহ সে ছড়িয়ে দিচ্ছে ফসলের মাঠে, খালে, বিলে পুকুরে। সে তখন জলের রাজা। তার রত্নভাণ্ডার উপছে পড়ছে জলসম্পদে। তার দুই পাড়ের বাঁশ, হিজল, ডুমুর, কড়ই, শেওড়া, সোনালু, চালতা কাউকেই সে আর পরোয়া করছে না। হিজলের ডালপালা তো বটেই আরও কত বৃক্ষের ডালপালাকে সে যে নাকানিচোবানি খাওয়াচ্ছে তা দেখার মতো। আর ওই যে এতদিন যারা তার দেহে নিজের মতো করে সাম্রাজ্য তৈরি করে নিয়েছিল সেই সব ঝোপঝাড়কে নাস্তানাবুদ করে কোথায় মিলিয়ে দিয়েছে তার সামান্য চিহ্ন কোথাও কোথাও প্রাণপণ চেষ্টায় টিকে আছে।
কচুরিপানার দল আটঘাট বেঁধে যে শ্বাসরুদ্ধ অবস্থা তৈরি করেছিল, এখন কোথায় তারা! প্রচণ্ড স্রোতের তোড়ে নাকানি-চোবানি খেতে খেতে ওদের প্রাণ ওষ্ঠাগত। ঘোলা জলের প্রচণ্ড ঘূর্ণির মধ্যে পড়ে ওরা যেন নতুন এক গতিময় জীবনের আস্বাদ গ্রহণ করছে। আর এই বিপুল জলরাশির সঙ্গে প্রাণের কোলাহল নিয়ে ছড়িয়ে পড়ছে মৎসকুল। খালে, বিলে, পুকুরে, ডোবায়, নালায় ওরা আশ্রয় নেবে। পুকুরে গাছের ডাল ফেলে রাখা হয়েছে ওদের আশ্রয় নিরাপদ করার জন্য। সব গাছের ডাল দিয়ে জাগ হয়না। আম গাছের ডাল, হিজল গাছের ডাল জাগ দেওয়ার জন খুব ভালো। কিন্তু মান্দারের (মাদার) ডাল পুকুরে থাকলে মাছ পালাবে। সেই আশ্রয়ে যাওয়ার আগেই ওরা শিকার হচ্ছে জেলেদের। ধর্মজাল, বেড়জাল, ঝাঁকি জাল এবং বড়শি দিয়ে তখন মাছ শিকারের উৎসব।
পুঁটি, তিতপুঁটি, খলিশা, বইচা আর টেংরার গায়ে তখন রঙের আলপনা, দেহে প্রাণের উচ্ছ্বাস। সবাই সেজেছে বিয়ের সাজে। কিন্তু উৎসবের সেই মাহেন্দ্রক্ষণে তারা ধরা পড়ছে জালে। শুধু কি তারা, জালে ধরা পড়ছে রুই, কাতল, মৃগেল, শোল, বোয়াল, আইড় ও চিতলের মতো বড় মাছ থেকে শুরু করে কৈ, শিং, মাগুর, বেলে, মৌরালা, চাপিলা, মলা, চেলা, চান্দা, কাইক্কা, মেনি, বাইম এবং আরও কত মাছ। চিংড়ি মাছ ধরার জন্য কেউ কেউ ঝোপঝাড়ের নিচে জলের তল পরিষ্কার করে কিংবা ধানক্ষেত, পাটক্ষেতের আল ডুবিয়ে ডুবিয়ে পরিষ্কার করে সন্ধ্যার অন্ধকারে পেতে রাখে চাঁই। কেউ যেন দেখতে না পায়। দেখলে চাঁই চুরি হয়ে যাওয়ার আশঙ্কা। তারপর খুব ভোরে নৌকা নিয়ে উঠিয়ে আনতে হবে। চাঁইয়ে শুধু যে চিংড়ি মাছ আটকে যায় তা নয়- শিং মাছ, মাগুর মাছ এবং অন্য মাছও আটকে যায়। এমনকি জলজ সাপও মাছ খেতে গিয়ে চাঁইয়ে ঢুকে আর বের হতে পারত না। টাটকা ওই চিংড়ি পুড়ে তার ভর্তা দিয়ে যারা পান্তা ভাত খায়নি তারা জীবনে খেল কী! ওই স্বাদ পৃথিবীতে দ্বিতীয়টি আর নেই।
এখন আর আলাদা করে খালের চিহ্ন নেই কোথাও। দুই পাড় প্লাবিত হয়ে মিশে গেছে জলের জগতে। জল উঠে এসেছে উঁচু কোলাকাঞ্চিতে, নিচু বাগানে, বাড়ির আনাচে-কানাচে। সেই নির্জন স্বচ্ছতোয়া জলের জগতে মাছেরা বিচরণ করবে নিঃশব্দে। আর রাতের অন্ধকারে তারা শিকার হবে অন্য এক নিভৃতচারী মৎস্য শিকারীদের হাতে। এরা রাতের অন্ধকারে টর্চ নিয়ে বের হয়। হাতে কোচ। স্বল্প পানিতে আলো ফেলে দেখবে জলের নিচে শুয়ে আছে শিং, মাগুর, শোল, টাকি, রয়না, চিংড়ি, বেলে। কোচের ঘাই পড়বে ওদের পিঠে। জলও টের পাবে না তাদের কোল থেকে, পিঠ থেকে, পেট থেকে তুলে আনা হচ্ছে তাদের আশ্রয়ে থাকা মৎস অতিথিদের। সবারই পিঠে ঝুলানো ডুলা- মাছ রাখার পাত্র। এক হাতে কোচ। অন্য হাতে টর্চ। ঠোঁটে বিড়ি। ভয়ঙ্কর এই মৎস শিকারীদের হাত থেকে খুব কম মাছই রক্ষা পায়। খাল প্লাবিত হয়ে জলের বিস্তারের মধ্যেই শুধু নয়, জৈষ্ঠ্যের নবীন জলেও এই শিকারীদের দেখতে পাওয়া যায়।
আষাঢ়ের ওই খালের জল শ্রাবণে এসে যেন পূর্ণতা পায়। তখন পরিপূর্ণ জল শান্তস্নিগ্ধ। স্রোত কম, ঘূর্ণন কম, অস্থিরতা নেই, সংক্ষোভ নেই। জলও তখন আর ঘোলা নয় বরং ফটিকস্বচ্ছ। সেই স্বচ্ছতোয়া জলের ভেতর দিয়ে ঝাঁকে ঝাঁকে চলতে দেখা যায় খলিশাদের, পুঁটিদের, রুইদের, কাতলদের। আর তখন টান পড়ে ধর্মজালে। এবং জালের ভেতর থেকে বের হয়ে যাওয়ার জন্য শুরু হয় মাছদের লম্ফঝম্প। মাছেরা সাদা পেট দেখিয়ে যখন পানি ছেড়ে লাফিয় উপরে ওঠে, তখন সেই পেটে সূর্যের আলো পড়ে ছড়িয়ে যায় চারদিকে। সেই দৃশ্য ছিল দেখার মতো।
শ্রাবণের খালে আবার জমতে থাকে কচুরিপানা। কচুরিপানার সঙ্গে আছে ওদের ছাওপোনা ক্ষুদিপানা। এই ক্ষুদিপানারা স্রোতের মধ্যে সুবিধা করতে পারে না। ওদের দরকার স্থবির জল- পুকুর, ডোবা, নালা। শৈবালের গোষ্ঠীরও তখন আত্মায় পানি আসে। স্রোতের প্রচণ্ড তোড়ে এতদিন যারা দৌড়ের উপর ছিল এখন তাদের পোয়াবারো। বেশ জমাট হয়ে বেড়ে উঠেছে খালের তল থেকে। কখনো কখনো এত জমাট যে শ্যাওলা রং আর বোঝা যায় না। মনে হয় মেঘের মতো ঘন অন্ধকার। কিন্তু যতদিন খাল জলে টইটম্বুর ততদিনই ওদের ওই জাঁকালো অবস্থা। ধীরে ধীরে জল কমে আসবে আর ওদের আয়ুও ফুরিয়ে যাবে। খালের পাড়ে এবং বিলের কোথাও কোথাও ওদের সবুজ একটা আস্তরণ ছাড়া আর কিছুই দেখা যাবে না এক সময়।
শ্রাবণের এই জলের সঙ্গে মিতালি তৈরি হয় শাপলা, শালুক, পদ্ম, মাখনা, পানিফলসহ আরও অনেক জলজ উদ্ভিদের। জলের উপরে তলসমান হয়ে পদ্মপাতা আর মাখনা পাতাগুলো ভেসে থাকে। পদ্মপাতা তো ভালোবাসার প্রতীকের মতো, যেন প্রেমিক-প্রেমিকাদের হৃদয়। জলের সঙ্গে নিবিড় মমতায় লিন হয়ে থাকে। ঢেউয়ের সঙ্গে দোল খায়। কিন্তু অবাক কাণ্ড, পাতার উপরে জল উঠে পড়ে না। বাতাস আপ্রাণ চেষ্টা করে পাতা উলটে দিতে চায় কখনো। কিন্তু উলটে যায় না। আর মাখনা পাতা তো বিশাল। জলের উপর ভেসে থাকা এত বড় পাতা পৃথিবীতে আর বুঝি দ্বিতীয়টি নেই। স্রোতহীন খালের জলে, বিলের জলে আর ডোবা নালায় কিছু দিন আনন্দে থাকে ওরা।
এদের তো তবুও গোড়া আছে, শিকড় আছে । নড়াচড়া করে না। শুধু স্রোতের সঙ্গে সঙ্গে ভেসে বেড়ায়। কিন্তু আরও কতোগুলো লতাজাতীয় উদ্ভিদ তখন জমাট বাঁধতে থাকে। এরা হলো জলকলমি, মালঞ্চা ওরফে ইচা শাক, হেলেঞ্চা ওরফে হেলেঞ্চা শাক, হলুদ ফুলের ঝাঁঝি, সাদা ফুলের চাঁদমালা। কচুরিপানার সঙ্গে তাল মিলিয়ে এরাও জমাট বাঁধতে থাকে খালে, বিলে, পুকুরে। এদের কোনো ঠাঁই নেই, গোড়া নেই, শিকর জলে ভাসমান। নৌকা চলাচলে কচুরিপানার মহা যন্ত্রণার সঙ্গে এইসব ভাসমান জলজ উদ্ভিদের যন্ত্রণাও নেহাত কম নয়। তবুও বর্ষায় গ্রামীণ জীবনে প্রাণের কোলাহল তৈরি হয়। কৃষকেরা নৌকায় করে পাট নিয়ে মহানন্দে বাজারে যাবে। পাট বিক্রি করে বাজার থেকে নিয়ে আসবে দুষ্পাপ্য ইলিশ মাছ, কাঁঠাল আর ফজলি আম। আর চিড়া-মুড়ি-মুড়কি তো বাড়িতে আছেই।
আশ্বিন-কার্তিকে গিয়ে সব কিছুতেই টান ধরে। খালের জল থেকে শুরু করে ঘরের চালে, খাওয়া-খাদ্যে, ভরণ-পোষণে। মনে হয় খালের জলে ভাটার টান বাড়তে থাকার সঙ্গে সঙ্গে কৃষকদের ঘরেও তখন টান পড়ে। ভাদ্র ও আশ্বিন মাস পর্যন্ত টেনেটুনে জোড়াতালি দিয়ে কোনো রকমে চলতে পাড়লেও কার্তিকে এসে যেন আর চলে না। তখন খালের জলে ভাটার টানে মৎস সম্প্রদায়ের প্রত্যাবর্তনের পালা শুরু হয়। আর গ্রামীণ জীবনে শুরু হয় মাছ ধরার উৎসব। খালের পাড় তখন জেগে উঠেছে। সেই পুরনো জলের, কাদার, ধানফুলের, কাশফুলের, ধঞ্চাফুলের চিরকালের গন্ধের ভেতরে মিলেমিশে থাকে মাছের আঁশটে গন্ধ। নির্দিষ্ট দূরে দূরে গোল করে বাঁশের কঞ্চি গেঁথে গেঁথে যার যার মতো করে ধর্মজাল বাওয়ার আসন তৈরি করে নেয় সবাই। কার্তিক-অগ্রহায়ণ পর্যন্ত চলে মাছ ধরার এই মহোৎসব। এত মাছ, এত মাছ! পাড়া-প্রতিবেশীদের, আত্মীয়-স্বজনদের মাঝে বিলেয়েও মাছের শেষ নেই। তখন টিনের চালে মাছ। চালুনে মাছ। গুনায় গেঁথে গেঁথে রোদে শুকানো হচ্ছে মাছ। মাছের আকালের সময় শুটকির আয়োজন।
পৌষ-মাঘ মাসে খালের পানি শুকিয়ে যেতে থাকে। জোয়ার-ভাটার জল আর নেই। তখন খালের অংশ-বিশেষে বাঁধ দিয়ে পানি সেচেও চলে মাছ ধরার অন্য এক আয়োজন। এছাড়া জমে থাকা কচুরিপানার ভেতরে যেসব জিয়ল মাছ আশ্রয় নিয়ে থাকে তাদেরকে ধরার জন্য গ্রামের কিশোর-কিশোরীরা ঠেলাজাল, চালুন, পলো এবং আরও নানা রকম সামগ্রী নিয়ে নেমে পড়ে খালে।
ফাল্গুন-চৈত্র মাসে দেখা যেত খালের অনেক অংশেই কোনো পানি নেই। কোথাও কোথাও সামান্য পানি। শিশুরা ওই সামান্য পানিতে মাছ ধরছে আর কাদা ও শেওলায় মাখামাখি হয়ে ভুতের মতো চেহারা করে আনন্দে লাফাতে লাফাতে বাড়ি ফিরছে।
খালের তলদেশে তখন বিষকাটালি গাছের সাম্রাজ্য। সঙ্গে আছে বন তুলসি, পাকুর, পানি বিষকাটালি, জংলি বিষকাটালি, শিশু বিষকাটালি, বরনউখা; সামান্য জল আর কাদার মধ্যে মহা আনন্দে বিরাজমান জলকলমি, কচুরিপানা, ক্ষুদিপানা, টোপাপানা, গুড়িপানা, শৈবাল, নলখাগড়া, পানিশাক, পানিকলা, শুশনিশাক, শ্যামাকোলা এবং আরও অসংখ্য জলজ গুল্ম। তখন খালকে আর খাল মনে হয় না- মনে হয় এঁকেবেঁকে যাওয়া সবুজ রাস্তা। ঘর থেকে মশা-মাছি ও কীটপতঙ্গ তারানোর জন্য খাল থেকে সংগ্রহ করা হয় বিষকাটালি। ঘরের দরজায় রাখা হয় ঝুলিয়ে। কারো গুটিবসন্ত হলে হোগলার বিছানার নিচে বিছিয়ে রাখা হয় ওই বিষকাটালি। আবার প্রকৃতির ডাকে সাড়া দিতেও অনেকে খালের তলের বিষকাটালি ও অন্যান্য গুল্মের আড়াল খুঁজে নেয়।
কিন্তু বৈশাখের শুরুতেই শুরু হয় খালগুলোর বদলে যাওয়ার পালা। নতুন জল প্রবাহিত হতে শুরু করে তার দেহে। প্রাণ খুঁজে পায় খালগুলো। আস্তে আস্তে তার দেহে যৌবন জেগে ওঠে। এক সময় শ্রোতের তোড়ে নিশ্চিহ্ন হয়ে যায় গুল্মের উপনিবেশ।
গ্রামীণ জীবনে শৈশবের বিচিত্র রূপ-রস-সৌন্দর্য ও আনন্দের সেই খালগুলো কোথায় হারিয়ে গেল! এখন মাঝে-মধ্যে স্বপ্নের ভেতরে খালের স্বচ্ছতোয় জলে ডুব দিয়ে দিয়ে উপরে বৃষ্টির রিমঝিম শব্দ শুনি। আর মনে হয়, কোনো এক জলপরিদের জগতে অর্ধনারীশ্বরীদের সঙ্গে জলকেলিতে মেতে উঠেছি। চলবে
লেখক: কথাসাহিত্যিক ও শিক্ষাবিদ