সলিল চৌধুরীর তিনটে গান

প্রকাশিত : নভেম্বর ১৯, ২০২০

সঙ্গীতজ্ঞ সলিল চৌধুরীর আজ জন্মদিন। ১৯২৫ সালের ১৯ নভেম্বর গুয়াহাটির সোনারপুরের রাজপুরে তিনি জন্মগ্রহণ করেন। ছাড়পত্রের পক্ষ থেকে তার প্রতি শ্রদ্ধার্ঘ্য হিসেবে তার লেখা তিনটে গান পুনর্মুদ্রণ করা হলো:

১.
আজ নয় গুনগুন গুঞ্জন প্রেমে
চাঁদফুল জ্যোছনার গান আর নয়
ওগো প্রিয় মোর খোলো বাহুডোর
পৃথিবী তোমারে যে চায়।

আর নয় নিষ্ফল ক্রন্দন
শুধু নিজের স্বার্থের বন্ধন
খুলে দাও জানালা আসুক
সারা বিশ্বের বেদনার স্পন্দন।
ধরণীর ধূলি হোক চন্দন
টীকা তার মাথে আজ
পরে নাও পরে নাও পরে না।।

কার ঘরে প্রদীপ জ্বলেনি
কার বাছার অন্ন মেলেনি
কার নেই আশ্রয় বর্ষায়
দিন কাটে ভাগ্যের ভরসায়
তুমি হও একজন তাদেরই
কাঁধে আজ তার ভার
তুলে নাও তুলে নাও তুলে নাও।

২.
আমি ঝড়ের কাছে রেখে গেলাম আমার ঠিকানা
আমি কাঁদলাম বহু হাসলাম
এই জীবন জোয়ারে ভাসলাম
আমি বন্যার কাছে ঘূর্ণীর কাছে রাখলাম নিশানা।

কখন জানি না সে তুমি আমার জীবনে এসে
যেন স্বঘন শ্রাবণে প্লাবনে দু’কূলে ভেসে
শুধু হেসে ভালোবেসে
যত যত নেশা যেন স্বপ্ন হলো সকলই নিমেষে ভগ্ন
আমি দুর্বার স্রোতে ভাসলাম তরী অজানা নিশানা।

ওগো ঝরাপাতা যদি আবার কখনো ডাকো
সেই শ্যামল হারানো স্বপ্ন মনেতে রাখো
যদি ডাকো যদি ডাকো
আমি আবার কাঁদবো হাসবো
এই জীবন জোয়ারে ভাসবো
আমি বজ্রের কাছে মৃত্যুর কাছে রেখে যাব নিশানা।।

৩,
আয় বৃষ্টি ঝেপে ধান দেব মেপে
আয় রিমঝিম বর্ষার গগনে রে
কাঠফাটা রোদের আগুনে
আয় বৃষ্টি ঝেপে আয় রে।

হায় বিধি বড়ই দারুণ
পোড়া মাটি কেঁদে মরে ফসল ফলে না
হায় বিধি বড়ই দারুণ
ক্ষুধার আগুন জ্বলে আহার মেলে না
কী দেব তোমারে
নাই যে ধান খামারে
মোর কপালগুণে রে
কাঠফাটা রোদের আগুনে আয় বৃষ্টিপ ঝেপে আয় রে।।

এই জীবন মাটির মতোন
ফুলেফলে ভরিতে চায় সোনার কামনা
এই জীবন মাটির মতোন
স্নেহবিনা শুকায়ে যায় সাধের সাধনা।
আয় রে মেঘ মায়া দে
শ্যামল করিয়া দে তোর মন্ত্রগুণে রে
কাঠফাটা রোদের আগুনে আয় বৃষ্টিপ ঝেপে আয় রে।।