সুরা ফাতিহার অর্থ, ফযিলত, বৈশিষ্ট্য ও গুরুত্ব

বিনতে মোহাম্মদ আলী

প্রকাশিত : আগস্ট ২৬, ২০২০

بسم الله الرحمن الرجيم
বিসমিল্লাহির রাহমানির রাহীম
পরম করুণাময় অসীম দয়ালু আল্লাহর নামে (শুরু করছি)
الْحَمْدُ لِلَّهِ رَبِّ الْعَالَمِينَ
আল-হামদু লিল্লাহি রাব্বিল আলামিন
সমস্ত প্রশংসা আল্লাহ্‌র জন্য যিনি সকল সৃষ্টি জগতের পালনকর্তা
الرَّحْمَنِ الرَّحِيمِ
আর রাহমানির রাহিম
যিনি অত্যন্ত মেহেরবান ও দয়ালু।
مَالِكِ يَوْمِ الدِّينِ
মালিকি ইয়াওমিদ্দিন
যিনি বিচার অধিকর্তা (মালিক)।
إِيَّاكَ نَعْبُدُ وإِيَّاكَ نَسْتَعِينُ
ই্‌য়াকানাবুদু ওয়া ইয়্যাকা নাসতাইন
আমরা একমাত্র তোমারই ইবাদত করি এবং শুধুমাত্র তোমারই কাছে সাহায্য প্রার্থনা করি।
اهدِنَــــا الصِّرَاطَ المُستَقِيمَ
ইহ দিনাস সিরাতাল মুস্তাকীম
আমাদেরকে সরল পথ দেখাও।
صِرَاطَ الَّذِينَ أَنعَمتَ عَلَيهِمْ
সিরাতাল লাযিনা আনআমতা আলাইহিম
সে সমস্ত লোকের পথ, যাদেরকে তুমি নেয়ামত দান করেছ।
غَيرِ المَغضُوبِ عَلَيهِمْ وَلا الضَّالِّينَ َ
গাইরিল মাগদুবি আলাইহিম ওয়ালাদ দুয়ালিন
সেইসব লোকের পথে নয় যারা তোমার অভিশাপগ্রস্ত এবং (তাদের পথেও) নয় যারা পথভ্রষ্ট।
امين
আমিন

এই সূরা রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম থেমে থেমে পড়তেন। বিসমিল্লাহির রহমানির রহীম পড়ে থামতেন। এরপর ‘আলহামদু লিল্লাহি রব্বিল আ-লামীন’ বলে থামতেন। একইভাবে প্রত্যেক আয়াত শেষে থেমে থেমে পড়তেন। (আবু দাঊদ, সুনান, হাকেম, মুস্তাদরাক, ইরওয়াউল গালীল, আলবানী ৩৪৩ নং)

নামাযে সূরা ফাতিহার গুরুত্ব
রাসুল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলতেন, সেই ব্যক্তির নামায হয় না, যে ব্যক্তি তাতে সূরা ফাতিহা পাঠ করে না। (বুখারী, মুসলিম, আআহমাদ, মুসনাদ, বায়হাকী, ইরওয়াউল গালীল, আলবানী ৩০২ নং)
সেই ব্যক্তির নামায যথেষ্ট নয়, যে তাতে সূরা ফাতিহা পাঠ করে না। (দারাক্বুত্বনী, সুনান, ইবনে হিব্বান, সহীহ, ইরওয়াউল গালীল, আলবানী ৩০২ নং)
যে ব্যক্তি এমন কোনও নামায পড়ে, যাতে সে সূরা ফাতিহা পাঠ করে না, তার ঐ নামায (গর্ভচ্যুত ভ্রুণের ন্যায়) অসম্পূর্ণ, অসম্পূর্ণ। (মুসলিম, আহমাদ, মিশকাত ৮২৩ নং)
আবু সাইদ রাফে ইবনে মুআল্লা (রাঃ) হতে বর্ণিত, তিনি বলেন, একদা রাসুলুল্লাহ (সাঃ) আমাকে বললেন, মসজিদ থেকে বের হবার পূর্বেই তোমাকে কি কুরআনের সবচেয়ে বড় (মাহাত্ম্যপূর্ণ) সূরা শিখিয়ে দেব না? এই বলে তিনি আমার হাত ধরলেন। এরপর যখন আমরা বাইরে যাওয়ার ইচ্ছা করলাম, তখন আমি নিবেদন করলাম, ইয়া রাসুলুল্লাহ (সা.), আপনি যে আমাকে বললেন তোমাকে অবশ্যই কুরআনের সব চেয়ে বড় (মাহাত্ম্যপূর্ণ) সূরা শিখিয়ে দেব? তিনি বললেন, (তা হচ্ছে) আলহামদু লিল্লাহি রাব্বিল আলামিন (সূরা ফাতেহা)। এটি হচ্ছে সাবউ মাসানি (অর্থাৎ নামাযে বারংবার পঠিতব্য সপ্ত আয়াত) এবং মহা কুরআন; যা আমাকে দান করা হয়েছে। (বুখারি ৪৪৭৪)

আল্লাহ তাআলা বলেন, আমি নামাযকে (সূরা ফাতিহা) আমার ও আমার বান্দার মাঝে আধাআধি ভাগ করে নিয়েছি; অর্ধেক আমার জন্য এবং অর্ধেক আমার বান্দার জন্য। আর আমার বান্দা তা-ই পায়, যা সে প্রার্থনা করে। সুতরাং বান্দা যখন বলে, ‘আলহামদু লিল্লাহি রাব্বিল আ-লামীন।’ তখন আল্লাহ তাআলা বলেন, ‘আমার বান্দা আমার প্রশংসা করল।’ অতঃপর বান্দা যখন বলে, ‘আররাহ্‌মা-নির রাহীম।’ তখন আল্লাহ বলেন, ‘বান্দা আমার স্তুতি বর্ণনা করল।’ আবার বান্দা যখন বলে, ‘মা-লিকি য়্যাউমিদ্দ্বীন।’ তখন আল্লাহ তাআলা বলেন, ‘বান্দা আমার গৌরব বর্ণনা করল।’ বান্দা যখন বলে, ‘ইয়্যা-কা না’বুদু অইয়্যা-কা নাস্তাঈন।’ তখন আল্লাহ বলেন, ‘এটা আমার ও আমার বান্দার মাঝে। আর আমার বান্দা তাই পায়, যা সে প্রার্থনা করে।’ অতঃপর বান্দা যখন বলে, ‘ইহ্‌দিনাস স্বিরা-ত্বাল মুস্তাকীম। স্বিরা-ত্বাল্লাযীনা আনআমতা আলাইহিম, গাইরিল মাগযূবি আলাইহিম অলায্ব যা-ল্লীন।
’ তখন আল্লাহ বলেন, ‘এসব কিছু আমার বান্দার জন্য। আর আমার বান্দা যা চায়, তাই পাবে। (মুসলিম, সহীহ ৩৯৫, আবূদাঊদ, সুনান, তিরমিযী, সুনান, আহমাদ, মুসনাদ, প্রমুখ, মিশকাত ৮২৩ নং)

উম্মুল কুরআনের (কুরআনের জননী সূরা ফাতিহা) মতো আল্লাহ আয্‌যা অজাল্ল্‌ তাওরাতে এবং ইঞ্জিলে কোনো কিছুই অবতীর্ণ করেননি। এই (সূরাই) হলো (নামাযে প্রত্যেক রাকআতে) পঠিত সাতটি আয়াত এবং মহা কুরআন, যা আমাকে দান করা হয়েছে। (নাসাঈ, সুনান,হাকেম, মুস্তাদরাক, তিরমিযী, সুনান, মিশকাত ২১৪২ নং)

নামায ভুলকারী সাহাবিকে রাসুল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এই সূরা তার নামাযে পাঠ করতে আদেশ দিয়েছিলেন। (বুখারী জুযউল ক্বিরাআহ্‌, সিফাতু স্বালাতিন নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম আলবানী ৯৮ পৃ:) অতএব নামাযে এ সূরা পাঠ করা ফরয এবং তা নামাযের একটি রুক্‌ন।

সুরা ফাতিহার ফজিলত
পুরো কুরআন শরীফের গুরুত্বপূর্ণ সূরা ফাতিহা। এ সূরার মাধ্যমেই সূচনা হয়েছে পবিত্র কুরআনের। সূরাটিকে আল কুরআনের সার সংক্ষেপও বলা হয়। এ সূরা নাজিল হয়েছে মানুষের সার্বিক কল্যাণ মুক্তি ও পথপ্রদর্শক হিসেবে। সূরাটি ফজিলতের দিক থেকে অন্য সব সূরার আলাদা। সূরা ফাতিহার ফজিলত সম্পর্কে অনেক হাদীছ বর্ণিত হয়েছে। এর মধ্যে কয়েকটি নিম্নরূপ:

★ উবাই ইবনু কা‘ব (রা.) বলেন, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন, আল্লাহ উম্মুল কুরআনের মতো তাওরাত ও ইনজিলে কিছু নাযিল করেননি। এটিকেই বলা হয়, ‘আস-সাব‘উল মাছানী’ (বারবার পঠিত সাতটি আয়াত), যাকে আমার ও আমার বান্দার মধ্যে বণ্টন করা হয়েছে। আর আমার বান্দার জন্য তাই রয়েছে, সে যা চাইবে। (নাসায়ী শরীফ ৩১৯)

★ আবু হুরায়রা রা. বলেন, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম  বলেছেন, তোমরা সূরা ফাতিহা পড়। কোন বান্দা যখন বলে, আলহামদুলিল্লাহি রাবিবল আলামীন, তখন আল্লাহ বলেন, আমার বান্দা আমার প্রশংসা করেছে। যখন বলে, আর-রহমা-নির রহীম, তখন আল্লাহ বলেন, আমার বান্দা আমার গুণ বর্ণনা করেছে। বান্দা যখন বলে, মালিকি ইয়াউমিদ্দীন। আল্লাহ বলেন, আমার বান্দা আমার মর্যাদা বর্ণনা করেছেন। বান্দা যখন বলে, ইয়্যাকানা’বুদু ওয়া ইয়্যা কানাস্তাইন, আল্লাহ বলেন, এ হচ্ছে আমার ও আমার বান্দার মাঝের কথা। আমার বান্দার জন্য তাই রয়েছে, যা সে চায়। বান্দা যখন বলে, ইহদিনাস সিরাতাল মুস্তাকিম.. (শেষ পর্যন্ত)। আল্লাহ বলেন, এসব হচ্ছে আমার বান্দার জন্য। আমার বান্দার জন্য তাই রয়েছে, যা সে চায়। (মুসলিম শরীফ ৩৯৫)

★ ইবনে আববাস (রা.) বলেন, একদা রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের কাছে জিবরাঈল (আ.) উপস্থিত ছিলেন। হঠাৎ জিবরাঈল (আ.) ওপর দিকে এক শব্দ শুনতে পেলেন এবং চক্ষু আকাশের দিকে করে বললেন, এ হচ্ছে আকাশের একটি দরজা যা পূর্বে কোনদিন খোলা হয়নি। সে দরজা দিয়ে একজন ফেরেশতা অবতীর্ণ হলেন এবং রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের কাছে এসে বললেন, ‘আপনি দুটি নূরের সুসংবাদ গ্রহণ করুন। যা আপনাকে প্রদান করা হয়েছে। তা আপনার পূর্বে কোন নবীকে প্রদান করা হয়নি। তা হচ্ছে সূরা ফাতিহা এবং সূরা বাকারার শেষ দু’আয়াত। (মুসলিম শরীফ ৮০৬)

★ বান্দা যখন নামাজে সুরা ফাতিহা পড়ে, আল্লাহ তখন তার প্রতিটি আয়াতের জবাব দেন। (মুসলিম ৯০৪)
★ সূরা ফাতিহা পড়ে যে বান্দা আল্লাহর কাছে রোগের শেফা চাইবে মহান আল্লাহ তার বান্দাকে ওই রোগ হতে শিফা দান করবেন। (নাসায়ী ৩১৯)
★ দোয়া কবুল হচ্ছে না? সূরা ফাতিহা ও সূরা বাকারার শেষ দুই আয়াত পড়ে দোয়া করুন। সূরা ফাতিহা এবং এরপর সূরা বাকারার শেষ দুটো আয়াত থেকে একটি অক্ষরও পড়ে আল্লাহ তা`য়ালার কাছে আপনি যা কিছু প্রার্থনা করবেন তা প্রদান করা হবে। (সহীহ মুসলিম  ১৭৬২)

সূরা ফাতিহার বৈশিষ্ট্য
এই সূরা কুরআনের সর্বাধিক মর্যাদাপূর্ণ সূরা। তাওরাত, জবুর, ইনজিল, কুরআন কোনো কিতাবে এই সূরার তুলনীয় কোন সূরা নেই। (বুখারি, মিশকাত ২১৪২)

এই সূরা এবং সূরায়ে বাকারার শেষ তিনটি আয়াত হল আল্লাহর পক্ষ থেকে প্রেরিত বিশেষ নূর, যা ইতিপূর্বে কোনো নবীকে দেওয়া হয়নি। (মুসলিম শরীফ ৮০৬)

যে ব্যক্তি নামাজে সূরা ফাতিহা পাঠ করল না, তার ছালাত অপূর্ণাঙ্গ। রাসূলুল্লাহ (সা.) এ কথাটি তিনবার বললেন। (মিশকাত ৮২৩)

আবু সা‘ঈদ খুদরী রা. বলেন, একবার এক সফরে আমাদের এক সাথী জনৈক গোত্রপতিকে শুধুমাত্র সূরায়ে ফাতিহা পড়ে ফুঁ দিয়ে সাপের বিষ ঝাড়েন এবং তিনি সুস্থ হন। (বুখারি শরীফ ৫৪০৫)

সুরা ফাতিহার বিশেষ মর্যাদা হলো, আল্লাহ এটিকে নিজের ও নিজের বান্দার মধ্যে ভাগ করে নিয়েছেন। একে বাদ দিয়ে আল্লাহর নৈকট্য লাভ করা সম্ভব নয়। সেজন্যই এর নাম দেয়া হয়েছে ‘উম্মুল কুরআন’। পবিত্র কুরআন মূলত তিনটি বিষয়ে বিন্যস্ত। তাওহীদ, আহকাম ও নছীহত। সূরায়ে ইখলাছে ‘তাওহীদ’ পূর্ণাঙ্গভাবে থাকার কারণে তা কুরআনের এক তৃতীয়াংশের মর্যাদা পেয়েছে। কিন্তু সূরায়ে ফাতিহায় তিনটি বিষয় একত্রে থাকার কারণে তা ‘উম্মুল কুরআন’ হওয়ার মহত্তম মর্যাদা লাভে ধন্য হয়েছে। (তাফসীরে কুরতুবী ১৪৮)

সুরা ফাতেহার নামসমূহ
ফাতিহাতুল فاتحة الكتاب: ফাতিহা অর্থ ভূমিকা বা শুরু। যেহেতু ইহার মাধ্যমে নামায শুরু করা হয় এবং যেহেতু কুরআন মযীদেরও শুরুতে ইহা লিখিত হয়েছে, তাই নবী (সাঃ) এটিকে ফাতিহাতুল কিতাব হিসেবে নামকরণ করেছেন।

আস্ সাবউল মাছানী السبع المثاني যেহেতু নামাযের প্রতিটি রাকআতে এই সূরাটি বারবার পাঠ করা হয়, তাই এটিকে সাবউল মাছানী বলা হয়। মাছানী অর্থ দুই। তাই কেউ কেউ বলেছেন, সূরাটি দুইবার নাযিল হয়েছে বলে তাকে আস্ সাবউল মাছানী السبع المثاني বলা হয়।

উম্মুল কুরআন أم القرآن: উম্ম অর্থ মূল। সূরা ফাতিহার মধ্যে যেহেতু সমগ্র কুরআনের সারাংশ বিদ্যমান তাই ইহাকে রাসূল (সাঃ) উম্মুল কুরআন হিসেবে নামকরণ করেছেন।

উম্মুল কিতাব أم الكتاب: রাসূল (সাঃ) এটিকে উম্মুল কিতাব হিসেবে নামকরণ করেছেন। উম্মুল কুরআন আর উম্মুল কিতাবের একই অর্থ।

আল-কুরআনুল আযীম القرآن العظيم: রাসূল (সাঃ) বলেনঃ এটি হচ্ছে বারবার পঠিতব্য সাতটি আয়াত এবং আল-কুরআনুল আযীম। সমস্ত কুরআনের মর্মার্থ যেহেতু সংক্ষেপে এতে বিদ্যমান রয়েছে, তাই এটিকে মহান কুরআন বলা হয়েছে।

ফাতিহাতুল কুরআন فاتحة القرآن: ফাতিহাতুল কিতাব আর ফাতিহাতুল কুরআন একই অর্থে ব্যবহৃত হয়েছে।

আল ওয়াফিয়া الوافيه: সমস্ত কুরআনের অর্থ যেহেতু ইহাতে পূর্ণরূপে বিদ্যমান তাই ইহাকে ওয়াফিয়া বলা হয়েছে। সুফইয়ান বিন উয়াইনা এই নামে নামকরণ করেছেন।

আল-কাফিয়া (যথেষ্ট) الكافيه: নামাযে যেহেতু শুধু সূরা ফাতিহা পড়লে যথেষ্ট হয় আর ইহা ব্যতীত অন্য সূরা দিয়ে যেহেতু নামায পূর্ণ হয় না তাই ইহাকে কাফিয়া বলা হয়।

আল-আসাস (মূল)الأساس: ইবনে আব্বাস (রাঃ) থেকে বর্ণিত একটি দীর্ঘ হাদীছে এই নামটি বর্ণিত হয়েছে।

আশ্ শাফিয়া বা আশ্ শিফা الشفاء أو الشافية: কেননা রাসূল (সাঃ) বলেছেনঃ সূরা ফাতিহাতে রয়েছে প্রতিটি বিষাক্ত সাঁপ-বিচ্ছুর কামড়ের শিফা বা আরোগ্য।

সূরাতুল হামদ্ سورة الحمد: যেহেতু এই সূরার প্রথমেই আলহামদ শব্দটি এসেছে, তাই একে সূরাতুল হামদ বলা হয়।

আস্ সালাহ الصلاة: হাদীছে কুদসীতে এসেছে, আল্লাহ তাআলা বলেনঃ আমি নামাযকে বান্দা এবং আমার মাঝে দুইভাগে ভিক্ত করেছি। এখানে নামায দ্বারা উদ্দেশ্য হচ্ছে সূরা ফাতিহা।

আর্ রুকইয়াহ الرقية : (ঝাড়-ফুঁকের সূরা): যেহেতু এই সূরা দিয়ে ঝাঢ়ফুঁক করা হয় তাই রাসূল (সাঃ) একে এই নামে নামকরণ করেছেন।

সূরাতুস শুকর سورة الشكر: কেননা এতে আল্লাহর কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করা হয়েছে।

দুআর সূরা سورة الدعاء: কেননা এতে রয়েছে আল্লাহর কাছে দুআ। اهدنا الصراط المستقيم শেষ পর্যন্ত।

সূরাতুস সুওয়ালسورة السؤال. যেহেতু এই সূরায় বান্দার প্রার্থনা বিদ্যমান, তাই এই সূরাকে প্রার্থনার সূরা বলা হয়।

প্রার্থনার শিক্ষার কৌশল শিক্ষার সূরা سورة تعليم المسألة: ইমাম সুয়ুতী বলেনঃ এতে প্রার্থনা করার আদব বর্ণিত হয়েছে।

সূরাতুল মুনাজাত سورة المناجاة: কেননা বান্দা এতে আল্লাহর সাথে মুনাজাত করে থাকে। (গাপনভাবে কথা বলে)

সূরাতু তাফভীয سورة التفويض: কেননা বান্দা এটি পাঠ করার মাধ্যমে নিজেকে আল্লাহর দরবারে সোপর্দ করে দেন।

সূরাতুন নূর سورة النور

সূরাতুল কানজ سورة الكنز

যদিও সূরা ফাতিহার সর্বাধিক পরিচিত নাম ‘সূরাতুল ফাতিহা’। তারপরও সূরা ফাতিহার স্থান, মর্যাদা, বিষয়বস্তু, ভাবভাষা, প্রতিপাদ্য বিষয় ইত্যাদির প্রতি লক্ষ্য রেখে এর বিভিন্ন নাম দেওয়া হয়েছে এবং প্রত্যেক নামের সাথেই সূরাটির সামঞ্জস্য বিদ্যমান।

এই সূরাটির ফযীলত ও গুরুত্ব অপরিসীম। আল্লাহ যেন আমাদের সকলকেই সূরা ফাতিহার প্রতি আমল করে সে অনুযায়ী জীবন পরিচালনা করার তাওফীক দান করেন।