স্বকৃত নোমানের প্রবন্ধ ‘শিল্পমাধ্যমে যৌনতার ব্যবহার’

প্রকাশিত : জুন ২৬, ২০২০

গল্প-উপন্যাস বা নাটক-সিনেমায় কি যৌনদৃশ্য বর্ণনা বা প্রচার করা যাবে না? কেন যাবে না? অবশ্যই যাবে। গল্প-উপন্যাস-নাটক-সিনেমা―এসব শিল্পমাধ্যম তো বায়বীয় কিছু নয়। এগুলো আকাশ থেকে পড়ে না, এর সকল উপাদান এ মাটিতেই। এসব শিল্পমাধ্যম তো মানবজীবনেরই নান্দনিক উপস্থাপনা, জীবনেরই প্রতিসরণ। এসব লেখ্য ও দৃশ্যমাধ্যম মানবজীবনেরই কথা বলে। এসবের কেন্দ্রবিন্দুতে আছে মানুষ, মানুষের জীবন; যে জীবন শুধু কাব্যিক নয়, যে জীবন কেবল দ্বন্দ্বময় নয়, যার রূপ শুধু দৃশ্যময় নয়। জীবন সর্বব্যাপ্ত, তাই শিল্পও সর্বপ্রসারী। যৌনতা এই সর্বপ্রসারিতার বাইরের কিছু নয়। যৌনতা বায়বীয় কিছু নয়, এটি বাস্তব মানুষেরই প্রবৃত্তি, বাস্তব মানুষেরই অধিকার। শুধু অন্ন-বস্ত্র-শিক্ষা-চিকিৎসা-বাসস্থান নয়, যৌনতাও মানুষের অধিকার। গল্প-উপন্যাস বা নাটক-সিনেমা যেহেতু মানবজীবনেরই কথা বলে, সেহেতু এসবে যৌনতা থাকবে, থাকাটাই স্বাভাবিক। নইলে এসব শিল্পমাধ্যম মানবজীবনের সর্বব্যাপ্ততাকে ধরতে পারবে না।

কিন্তু একটু কথা আছে। সেক্স কি প্রকাশ্যে করার মতো কোনো ব্যাপার? আমরা কি প্রকাশ্যে সঙ্গম করি? আমরা যেমন প্রকাশ্যে ধূমপান করি, হোটেলে দশজনের সামনে প্রকাশ্যে ভাত-রুটি-মিষ্টি খাই কিংবা বিশাল গ্যলারিতে হাজার হাজার দর্শকের সামনে প্রকাশ্যে ক্রিকেট বা ফুটবল খেলি―সঙ্গম কি সেভাবে করি? অবশ্যই না। অনাগত দিনে হয়ত প্রকাশ্যে করা যাবে, বর্তমানে তো যাচ্ছে না। যে-কালে আমার বসবাস সেই কালে যৌনতার মধ্যে গোপনীয়তা রয়েছে, আড়াল রয়েছে। আমি ইচ্ছে করলেই দিনেদুপুরে ফার্মগেট ওভারব্রিজের ওপর কিংবা আইপেল টাওয়ারের নিচে কোনো নারীর সঙ্গে যৌনকর্মে লিপ্ত হতে পারি না। যৌনকর্মের জন্য বেডরুমে যেতে হয়, লোকচক্ষুর অন্তরালে যেতে হয়। কেন? এই জন্য যে, যৌনকর্ম একটা গোপনীয়তার ব্যাপার, একটা আড়ালের ব্যাপার। এই গোপনীয়তা বা আড়াল আছে বলেই যৌনতার প্রতি আমাদের এমন দুর্বার আকর্ষণ। আড়াল না থাকলে হয়ত আকর্ষণটা থাকত না।

যৌনতা যদি গোপন ব্যাপার হয়, শিল্পমাধ্যমে তা প্রকাশ্যে আসবে কোন যুক্তিতে? গল্প-উপন্যাস-নাটক-সিনেমা যদি মানবজীবনেরই নান্দনিক উপস্থাপনা হয়, তাহলে তো এসবে যৌনতা প্রকাশ্যে আসার কথা নয়। তাহলে কীভাবে আসবে? গল্প-উপন্যাসে যৌনতা ব্যবহার প্রসঙ্গে আখতারুজ্জামান ইলিয়াস থেকে উদাহরণ দেওয়া যেতে পারে। ‘খোয়াবনামা’র ৪২তম পর্বে: ‘পেটুক বাপের আধপেটা খাওয়া গতরের তাপ নিতে তমিজ হাত রাখে কুলসুমের পিঠে, তমিজের বাপের তাপ পোয়াতে তাকে নিবিড় করে টেনে নেয় নিজের শরীরে। পায়ের দুটো ঘা থেকে তার আধপেটা গতরের গন্ধ নিতে কুলসুম হাত বোলায় তমিজের হাঁটুতে আর ঊরুতে। আর তমিজের বাপ অনেক দূর থেকে কাৎলাহার বিলের চোরাবালির ভেতর থেকে তার লম্বা হাত বাড়িয়ে কিংবা হাতটাই লম্বা করে আলগোছে টেনে নেয় তমিজের তবন আর কুলসুমের শাড়ি। গরহাজির মানুষটার গায়ের ওম পেতে আর গায়ের গন্ধ শুঁকতে দুজনে ঢুকে পড়ে দুজনের ভেতরে।’

খেয়াল করলে দেখা যাবে, তমিজ ও তার সৎমা কুলসুমের দেহমিলনকে কতটা নান্দনিকতাভাবে উপস্থাপন করেছেন ইলিয়াস। তমিজের বাপ যখন তার লম্বা হাত বাড়িয়ে তমিজের তবন আর কুলসুমের শাড়িটা খুলে নেয়, তখন আমাদের বুঝতে অসুবিধা হয় না পরের দৃশ্যটা কী। এই দৃশ্যটা কী বলে দিতে হবে? না। বলে দিলে যে যৌনতার গোপনীয়তার শর্ত লঙ্ঘন হয়! এটাই হচ্ছে শিল্প। একেই বলে শিল্পে যৌনতা প্রকাশের সীমা। জীবনের রশ্মি এখানে এসে বেঁকে গেছে। এই বেঁকে যাওয়াই শিল্প-সাহিত্যে সৌন্দর্য সৃষ্টি করে।

কিন্তু আমরা তো প্রতিদিন কথাবার্তায় যৌনসংশ্লিষ্ট প্রচুর শব্দ ব্যবহার করি, যেগুলোকে সাধারণত আমরা ‘অশ্লীল শব্দ’ বলে থাকি। সেসব শব্দ কি শিল্পমাধ্যমে আসবে না? অবশ্যই আসবে। কিন্তু কীভাবে আসবে? আসার ধরনটা কী? আবারও ইলিয়াসের খোয়াবনামার ৭ নং অধ্যায় থেকে উদ্ধৃতি দিই: ‘এই কয়েক দিনে তমিজ জমিটাকে একেবারে মাখনের মতো করে ফেলেছে। সকালবেলার দিকে কয়েক পশলা বৃষ্টি হয়ে সন্ধ্যা পর্যন্ত পানি প্রায় পড়েই না। বিকালের দিকে আলের ওপর বসে দুই হাতে কাদা ছানতে ছানতে বৃষ্টির গন্ধে, কাদার গন্ধে, একটুখানি আভাস-দিয়ে-যাওয়া রোদের গন্ধে এবং হাতের সঞ্চালনে তমিজের ঘুম ঘুম পায়, এই সময় জমিতে একেবারে উপুড় হয়ে শোবার তাগিদে তার সারা শরীর এলিয়ে এলিয়ে পড়ে। হয়ত সত্যি সত্যি সে শুয়েই পড়তো, কিন্তু বেছে বেছে ঐ মুহূর্তেই শালার বুড়ার বেটা চিৎকার করে বলে, ‘ক্যা রে মাঝির ব্যাটা, মাটি কি মাগীমানষের দুধ? ওংকা কর‌্যা টিপিচ্ছো কিসক?...হাত দিয়া মটি ছানা হয় না। জমি চায় নাঙলের ফলা, বুঝলু? জমি হলো শালার মাগীমানুষের অধম, শালী বড়ো লটিমাগী রে, ছিনালের একশ্যাষ। নাঙলের চোদন না খালে মাগীর সুখ হয় না। হাত দিয়া তুই উগলান কী করিস?’

খেয়াল করা যেতে পারে, ঊর্ধ্বকমার (‘ ’) মধ্যে যে কথাগুলো সেগুলো কিন্তু ঔপন্যাসিকের নয়, একটি চরিত্রের―হুরমতুল্লার। হুরমতুল্লা কে? জীবন্ত মানুষ, যে মানুষকে নিয়ে শিল্প-সাহিত্যের কারবার। এই জীবন্ত মানুষ যে ভাষায় কথা বলে হুবহু সেই ভাষাই লেখক তার উপন্যাসে উপস্থাপন করেছেন। কিন্তু লেখকের বর্ণনার যে ভাষা, তা কিন্তু মার্জিত, পরিশীলিত। এই ভাষায় লেখক দৈনন্দিনতা নিরপেক্ষ। কেননা এই ভাষার মাধ্যমে লেখক তার পাঠকদের সঙ্গে কমিউনিকেট করছেন। এটা যোগাযোগের ভাষা। এই ভাষায় দৈনন্দিনতার যৌনতাসংশ্লিষ্ট শব্দগুলো নেই। কেন নেই? আমরা প্রতিদিন প্রচুর কথা বলি, কথার মধ্যে ‘শ্লীল-অশ্লীল’ প্রচুর শব্দ ব্যবহার করি। শ্লীল শব্দগুলো আমরা ব্যবহার করি সর্বসম্মুখে, কিন্তু অশ্লীল শব্দগুলো সর্বসম্মুখে ব্যবহার করতে পারি না। অফিসে সহকর্মীর সঙ্গে কিংবা ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তার সঙ্গে আমরা অশ্লীল ভাষায় কথা বলতে পারি না। কিংবা কোনো প্রচার মাধ্যমে―পত্রিকা, রেডিও, টেলিভিশন যা-ই হোক না কেন―কথা বলার সময় আমরা কথাগুলোকে সম্পাদনা করি। টেলিভিশনের টকশোতে গিয়ে কেউ কুরুচিপূর্ণ ভাষায়, অশ্লীল বা যৌনসংশ্লিষ্ট শব্দ প্রয়োগ করে কথা বলেন না। কথাগুলোকে তিনি সম্পাদনা করেন। কেন করেন? এই জন্য যে, তার কথাগুলো তখন আর তার নিজস্ব পরিমণ্ডলে থাকছে না, সর্বসাধারণের কাছে চলে যাচ্ছে।

তার মানে ভাষার মাধ্যমে সর্বসাধারণের সঙ্গে যোগাযোগের জন্য ভাষার একটা পরিশীলিত রূপ থাকা লাগে। ‘সভ্যসমাজের’ এই দস্তুর। একইভাবে একটি গল্প-উপন্যাস যখন আমি লিখছি, সেটা হয়ত নিজের জন্যই লিখছি। কিন্তু পাণ্ডুলিপিটা যখন বই আকারে ছাপতে দিচ্ছি, সেটা আমার জন্য ছাপা হচ্ছে না, হচ্ছে সর্বসাধারণের পাঠের জন্য। এ কারণেই গল্প-উপন্যাসে ব্যবহৃত ভাষাটাকে পরিশীলিতভাবে উপস্থাপন করতে হয়। আমার জীবনে বলা সব কথা, সব ভাষা, সব শব্দ ইচ্ছে করলেই গল্প-উপন্যাসে ঠেঁসে ঢুকিয়ে দিতে পারি না। কেননা আমি গল্প বা উপন্যাসটির মাধ্যমে সর্বসাধারণের সঙ্গে যোগাযোগ করতে চাইছি। গল্প-উপন্যাসে আমি যখন বর্ণনা দিচ্ছি তখন ইচ্ছে করলেই মানুষ যেগুলোকে অশ্লীল শব্দ বলে সেগুলোকে ব্যবহার করতে পারি না। কেননা তা আমার যোগাযোগের ভাষা, শিল্পের ভাষা, গল্প-উপন্যাসের চরিত্রের দৈনন্দিনতার ভাষা নয়।

কথাশিল্পী ডিএইচ লরেন্স মনে করতেন মানবীয় সম্পর্কের আসল ভিত্তি দেহ এবং সভ্যতা বৃদ্ধির সঙ্গে সঙ্গে দেহের অস্তিত্ব ভুলে মানুষ জগতকে দুঃস্থ ও দুর্নীতিময় করে তুলেছে। তাঁর ‘লেডি চ্যাটার্লিজ লাভার’ উপন্যাসে দেহধর্মের আদিম কামনার জয় ঘোষিত হয়েছে। পক্ষাঘাতগ্রস্ত পুরুষত্বহীন শিল্পপতি স্যার ক্লিফোর্ডকে পরিত্যাগ করে লেডি চ্যাটার্লি মুক্ত অরণ্যভূমিতে, মৃত্তিকায়, বর্ষাধারায় আদিম নারীর মতো স্বামীর ‘গেম-কিপার’ বা শিকার-রক্ষক নিম্নরুচির অথচ স্বাস্থ্যের আদিম রক্তে তাজা মেলরস-এর কাছে দেহ সমর্পণে ও যৌনসঙ্গমে আত্মার মুক্তি খুঁজে পেয়েছে। এটা করতে গিয়ে লরেন্স তাঁর পুরো উপন্যাসে কটি ‘স্ল্যাং ওয়ার্ড’ বা ‘অশ্লীল শব্দ’ বা যৌনসংশ্লিষ্ট শব্দ ব্যবহার করেছেন? মেলরস-এর সঙ্গে চ্যাটার্লির সঙ্গম কোন ভঙ্গিমায়, কোন রীতিতে বা কোন মুদ্রায় হয়েছিল কিংবা উভয়ের বীর্যস্খলনের দৃশ্য কি লরেন্স বর্ণনা করেছেন? উভয়ের শীৎকারকে কি তিনি লেখ্যরূপ দিয়েছেন? না, দেননি। নিশ্চয় একটা সীমা তিনি বজায় রেখেছেন, যেটাকে বলা হয় শিল্পের সীমা। এই সীমা যদি তিনি বজায় না রাখতেন, তাহলে এটি উপন্যাস হতো না, হতো সেক্সবুক বা চটি। চ্যাটার্লি ও মেলরস-এর সঙ্গমকে তিনি এমন শিল্পীত উপায়ে উপস্থাপন করেছেন, যেখানে অশ্লীল শব্দ বা বাক্যের ব্যবহার কিংবা দৃশ্যের বর্ণনার দরকার পড়েনি।

কিংবা এমিল জোলার ‘তেরেসা’ উপন্যাসের কথাই ধরা যাক। জোলা তো তথাকথিত অশ্লীলতার দায়ে অভিযুক্ত ছিলেন। তাঁর উপন্যাসে যৌনতার মাত্রা কেমন? বন্ধুপত্নী তেরেসাকে পাওয়ার জন্য তার স্বামী ক্যামিলাসকে নদীতে ডুবিয়ে মারে লঁরা। তবু সে নিশ্চিত হয় না। ক্যামিলাসের মৃত্যুর ব্যাপারে নিশ্চিত হওয়ার জন্য সে লাশঘরে গিয়ে তার লাশ খোঁজে। লাশঘরে প্রেমের জন্য ফাঁস নিয়ে আত্মহত্যাকারী এক মেয়ের অনাবৃত বক্ষদেশ দেখে লঁরা যৌনকাতর হয়। একটা ভয়ার্ত কামনায় অনেকক্ষণ ধরে চোখ দিয়ে মৃত মেয়েটার সর্বাঙ্গ লেহন করে। পাঠক হিসেবে আমরা যখন এই দৃশ্য পড়ি তখন কিন্তু যৌনতাড়িত হই না, বরং একধরনের বিবমিষা জাগে আমাদের ভেতর। আমরা ভয়তাড়িত হই। কিংবা লঁরা যখন তেরেসার কক্ষে গিয়ে দিনের পর দিন তার সঙ্গে যৌনমিলনে লিপ্ত হয় তখনো কিন্তু আমাদের মধ্যে যৌনতাড়নার সৃষ্টি হয় না, বরং তেরেসার বেচারা স্বামী ক্যামিলাসের জন্য আমাদের মায়া হয়। তেরেসা ও লঁরার শীৎকারকে জোলা তার উপন্যাসে লেখ্যরূপে উপস্থাপন করেননি। কোন ভঙ্গিমায় লঁরা তেরেসায় উপগত হয়েছিল তার বর্ণনাও দেননি। দিলে শিল্পের শর্ত লঙ্ঘন হতো। তিনি যৌনতাকে এমন একটা মাত্রায় রেখেছেন, যা শিল্পের মাত্রা। রেখেছেন বলেই ‘তেরেসা’ শিল্প হয়ে উঠেছে।

তার মানে গল্প-উপন্যাসে যৌনতা ব্যবহারের একটা মাত্রা আছে। গল্প-উপন্যাসে যৌনতাকে উপস্থাপনের জন্য দরকার শিল্পিত ভাষা, শিল্পিত শব্দ; যেহেতু গল্প-উপন্যাস একটি শিল্পকর্ম। ভাষাই হচ্ছে কথাশিল্পীর শক্তি। আমাদের দৈনন্দিন জীবন কিন্তু শিল্পিত নয়, আমরা শিল্পিত জীবন যাপন করি না। আমাদের জীবনটাকে যখন শিল্পের মাধ্যমে উপস্থাপন করতে চাই, তার উপস্থাপনাও হবে শিল্পিত, তার ভাষাও হবে শৈল্পিক। এর ব্যত্যয় ঘটলে সেটা আর যাই হোক, শিল্প নয়।

কিন্তু নাটক-সিনেমা বা ওয়েব সিরিজে তো শব্দ বা ভাষা দিয়ে যৌনতার উপস্থাপন সম্ভব নয়। সেটা দৃশ্যমাধ্যমে দেখাতে হবে। যেমন ধরা যাক, অধিকাংশ বাঙালি মনে করে স্ত্রীসঙ্গম মানে একটা দৈনন্দিন কর্ম, একটা রুটিন। ভাত খাওয়া যেমন, পেশাব-পায়খানা করা যেমন। তারা জানে না সঙ্গমেরও যে একটা আর্ট আছে। জানে না বাৎসায়ন যে বহু পরিশ্রম করে এই আর্টের সূত্র দিয়েছেন। তারা চড়ুই পাখির মতো উপগত হয় এবং অবতরণ করে। এরকম একটি বাঙালি চরিত্রকে যদি কোনো নাট্য বা চলচ্চিত্র পরিচালক নাটক-সিনেমার দৃশ্যমাধ্যমে ধরতে চান, তিনি কি যৌনদৃশ্য প্রদর্শন করতে পারবেন না? কেন পারবেন না? অবশ্যই পারবেন। প্রদর্শন না করলে তো চরিত্রটাই দাঁড়াবে না। প্রাসঙ্গিকভাবে যৌনদৃশ্য নাটক-সিনেমায় প্রচার করা যেতেই পারে, তবে তা অবশ্যই শৈল্পিকভাবে, প্রাসঙ্গিকভাবে হওয়া চাই। শৈল্পিকভাবে অর্থাৎ, সেই যৌনদৃশ্য সানি লিউনের সেক্সদৃশ্যের মতো নয়, মিয়া খলিফার সেক্সদৃশ্যের মতো নয়। সেই যৌনদৃশ্যেরও একটা আর্ট থাকবে, সীমা থাকবে, পরিমিতি থাকবে। পরিমিতি শিল্পের জন্য খুবই গুরুত্বপূর্ণ। এই আর্ট, সীমা ও পরিমিতি ঠিক করে নেবেন পরিচালক। আর প্রাসঙ্গিক অর্থ হচ্ছে, চরিত্রের সঙ্গে, ঘটনার সঙ্গে যায় তেমন যৌনদৃশ্য। যে যৌনদৃশ্য চরিত্র ও ঘটনার সঙ্গে যায় না, যা খাপছাড়া, যা জবরদস্তি করে ঢুকিয়ে দেওয়া হয়, তা অপ্রাসঙ্গিক। শিল্পমাধ্যমে অপ্রাসঙ্গিক সব কিছুই অশ্লীল। রাস্তায় থুতু ফেলা কিংবা পেশাব-পায়খানা করা যেমন অশ্লীল।

২৫.৬.২০২০