শামীমা জামানের গল্প ‘সোনার পুতুল’

দৈবের ওপর কারুর দাপট চলে না। সেটাও ছিল রবিবার, নরেন তখনো এসে পৌঁছয়নি। নরেনের রংটা ছিল একটু ময়লা—ঠিক কালো নয় কিন্তু এই অল্প অপরাধেই সে “কালাচাঁদ” নাম পেয়েছিল।

অনেক ভেবে কণা রাজি হয়। আবক্ষ নগ্ন ছবির মডেল হবে সে। পরদিন সকালে কণা উপস্থিত হলো তমালের ফ্লাটে। ক্যানভাস, ইজেল, রং, তুলি আর মনের ভেতর দারুণ উত্তেজনায় প্রস্তুত তমাল। স্বপ্নের ছবিটি আঁকা হবে আজ

ছন্দু ঠিক মোতালেবের মাথার কাছে দাঁড়িয়ে। হাতে বিরাট একটা রামদা। ওদিকে মোতালেবের ধড় থেকে মাথাটা আলাদা হয়ে বিছানাতেই পড়ে আছে এবং সারা বিছানাসহ মেঝে রক্তে ভেসে যাচ্ছে

মতিন সাহেব একটু লজ্জা পেলেন। অনেক কিছুই মনে রাখতে পারেন না ইদানীং। দিন কয়েক আগে স্ত্রীর নামটাও ভুলে গিয়েছিলেন। সংগোপনে ছুটে গিয়েছিলেন ডাক্তারের কাছে— ডক্টর ডক্টর, আমাকে উদ্ধার করুন

অনেকক্ষণ পর অবশেষে বেল বাজলো। নার্স দ্রুত চিরুনি দিয়ে চন্দ্রের চুল ঠিক করে দিলো। সূর্যের শার্টের কলার সোজা করে দিলো। ভাই-বোন দুজনের হাত ধরিয়ে দিলো একসাথে।

অরিত্র চৌধুরীর ইদানীং কোনো কাজই হচ্ছে না। পেশায় উনি একজন লেখক। যখনই লিখতে বসেন, তখনই হেঁচকি পায় উনার। হেঁচকি থেকে বাঁচতে ইদানীং হাতের কাছে দুই লিটারের একটি পানির বোতল রাখেন।

মা, আমি তো এখন একটা লাশ মাত্র! শব, মড়া। আমার মন-মস্তিষ্ক মৃত। আমার দেহ মৃত। দেহের সকল অঙ্গ-প্রত্যঙ্গ— চোখ, নাক, মুখ— হাত, পা— সবকিছু মৃত

মাথা নিচু করে নিঃশব্দে সরে যায় দুই ভাই। বাবা ও মা এই দুটিই যাদের নেই, তাদের কোনো অপমানই আর গায়ে লাগে না। অনেক দুর্ব্যবহারেও ছেলে দুটি চাচার দিকে তাকিয়ে থাকে আড়াল থেকে