শামীমা জামানের গল্প ‘সোনার পুতুল’

সকালে একটা পার্সেল এসে পৌঁছেছে। খুলে দেখি একজোড়া জুতো। না, শত্রুপক্ষের কাজ নয়। একজোড়া পুরোনো ছেঁড়া জুতো পাঠিয়ে আমার সঙ্গে রসিকতার চেষ্টাও করেনি কেউ। চমৎকার ঝকঝকে বাঘের চামড়ার নতুন চটি।

জীবন কী সেটা বুঝতে খুব ইচ্ছা হলো। তাই আবাল টাইপের সব এক্সপেরিমেন্ট করি। যেমন চলন্ত বাস দেখলে দ্রুত পার হবার চেষ্টা করি। বাস তীব্রভাবে হর্ণ দেয়। তাও থামি না। একদিন একটা বাস প্রায় গা ঘেঁষে চলে গেল।

যখন ওলাবিবি এসে ঘরকে ঘর উজাড় করে দিচ্ছিল তখন এই মনোয়ার হাজীই রক্ষা করেছিলেন গাঁটাকে। সাধ্য কি ওলাবিবির মনোয়ার হাজীর ফুঁয়ের সামনে দাঁড়ায়। দিন দুয়েকের মধ্যে তল্পিতল্পা নিযে পালিয়ে গেল ওলাবিবি, দু’দশ গাঁ ছেড়ে।

কার্তিকের মাঝামাঝি চৌধুরীদের খেজুর বাগান ঝুরতে শুরু করল মোতালেফ। তারপর দিন পনের যেতে না যেতেই নিকা করে নিয়ে এলো পাশের বাড়ির রাজেক মৃধার বিধবা স্ত্রী মাজু খাতুনকে। পাড়া-পড়শি সবাই তো অবাক।

কুরমান হাটে কাঁচের চুড়ি কিনতে এসেছে। মেজাজ খুব খারাপ। গা এখনো কশকশ করছে। তবু এ-দোকান থেকে ও দোকানে সে ঘোরাঘুরি করে। সোনালী কিনবে না বেগুনী কিনবে চট করে ঠাওর করতে পারে না।

সায়েদ আলী বাপদাদার কাছে শুনেছে, হাওর এলাকার আশেপাশের পাহাড়, টিলা বাংলাদেশের অন্যান্য এলাকার সাথে লালমাই পাহাড় ধরে সিলেট, হবিগঞ্জ, চট্টগ্রাম এবং মধুপুরের উঁচু এলাকাগুলোর সাথে যুক্ত ছিল।

ভাঙা সাঁকোর একপাশে বসে ছেলেটা কাঁদছিলো। হাতে ছিল রঙিন কাপড়ের পুটলি, তাতে মায়ের রাঙা শাড়ি বাপের কামিজ, মুড়ি বেচে সঞ্চয় করা পয়সা ভরা টিনের কৌটা, খালের জলে তার ছায়া স্থির। স্রোতে রক্ত মেশানো ছিল মানুষের।

বারবার কেন তার সঙ্গেই এ-রকম হয়, বুঝতে পারে না সুমি! যখন বুঝতে পারে না, অনুভব করতে পারে না, উপলব্ধি করতে পারে না, তখন খুব অসহায় বোধ করে সে। দুনিয়াটা বড় কঠিন মনে হয়। মনে হয়, সবকিছু খুব চ্যালেঞ্জের।