আবুল মনসুর আহমদের গল্প ‘হুজুর কেবলা’
কলিযুগেও দুনিয়ায় ধর্ম আছে। কলেজে এমদাদের দর্শনে অনার্স ছিল। কাজেই সে ধর্ম, খোদা, রসূল কিছুই মানিত না। সে খোদার আরশ, ফেরেশতা, ওহী, হযরতের মেরাজ লইয়া সর্বদা হাসিঠাট্টা করিত। কলেজ ম্যাগাজিনে সে মিল, হিউম, স্পেন্সার, কোমতের ভাব চুরি করিয়া অনেকবার খোদার অস্তিত্বের অসারতা প্রমাণ করিয়াছিল।
মার্চ ১৮, ২০১৯
রুদ্র হকের গল্প ‘আতরের গন্ধ’
আতর কি মৃত মানুষের শরীর থেকে উৎপন্ন হয়? মাঝে মাঝে বাসে উঠে বসা মাত্রই আমি আতরের উৎকট গন্ধ পেতে থাকি। এ সমস্যাটা প্রায়ই হয় আমার। একজন বুড়ো ভিক্ষুক ভারী চশমার ভেতর থেকে হাত বাড়িয়ে দিলেন। মৃত্যুর বদলে তিনি টাকা চাইছেন। আমি যমদূত ভেবে টাকা বাড়িয়ে দিলাম। তার মুখভরা গ্রামীণ রেখাচিত্র।
মার্চ ১৫, ২০১৯
শামীমা জামানের গল্প ‘চিত্রাবলি’
গেল বছর চিত্রাদের বাড়ির পিছনের বাঁশবাগান পার হয়ে যে ছোট পুকুরে ডুবে আসাদ স্বর্গবাসী হলো, জয়গুণ দাঁত খিচোলে সে এখানটাতে এসে বসে থাকে। ঘণ্টার পর ঘণ্টা। বাড়িতে ঢি ঢি পড়ে যায় তাকে খুঁজতে। সে চুপচাপ গুম হওয়া মানুষের মতো ঝিঁম ধরে বসে থাকে। এ পুকুরে কদাচিৎ কেউ আসে না।
মার্চ ১৩, ২০১৯
শাহরুখ পিকলুর একগুচ্ছ খুদে গপ্প
একদিন সকালে ঘুম থেকে উঠে হঠাৎ করেই যেন মোহাম্মাদ বদিউজ্জামান ওরফে বদি ঘর থেকে বেরিয়ে পড়ল। ঘরে নাশতার জোগাড় নেই, হবে না, তা সে জানে। টুম্পা, তার বউ, সে ব্যাপার জানে। তাই সে দুপুর পর্যন্ত ঘুমাবে। কোনো সন্তান না থাকার এই এক সুবিধা। বদি আজ তবে কেন বের হলো, সকালের নাশতাটাও না করে?
মার্চ ০৮, ২০১৯
সেই সকালে
শাহেদউদ্দিনের শাশুড়ির চোখ খানিকটা সরল হয়ে আসে। আশেপাশের অনেকেরও। তরুণীটি, যার নাম আফরিন, গাড়িটির সামনের দিকের একটি সুবিধাজনক আসনে এতক্ষণ বেশ সপ্রতিভ ভঙ্গিতে বসেছিল, এখন সে কেমন যেন আড়ষ্ট বোধ করে। ড্রাইভারের সামনের গ্লাসটিতে সে তার চোখ ফেলতে সাহস করে না।
মার্চ ০৬, ২০১৯
যখন আঁধার যখন কুয়াশা
টলতে টলতে এসে ভেজা ঘাসের ওপর শুয়ে পড়ে নূরি। দু’হাতে আঁকড়ে ধরে বুকের ওপর শুয়ে থাকা সঙ্গীকে। হাওয়ার ভেতর থেকে ফিসফিস করে কথা বলে সেই সঙ্গী। শিরশিরে হাওয়া পেঁচিয়ে যেতে থাকে দু’ঊরুর মাঝখানে। তলপেটে চাপ টের পায় সে, সুখ সুখ লাগে। শীত লাগে। ঘুম পায়। কুয়াশা নামে চোখের ওপর। নাভির নিচে।
মার্চ ০২, ২০১৯
জবাফুলের দুনিয়া
অমর একুশে গ্রন্থমেলা-২০১৯ এ প্রকাশিত হয়েছে গল্পকার দেবদুলাল মুন্নার চতুর্থ গল্পের বই `জবা ফুলের দুনিয়া`। বৈভব প্রকাশনী থেকে প্রকাশিত বইটির প্রচ্ছদ করেছেন শিল্পী কাব্য কারিম। বইটি পাওয়া যাচ্ছে মেলায় সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে `বৈভব’ এর ৪২২ নম্বর স্টলে। বইটি থেকে ‘জবাফুলের দুনিয়া’ গল্পটি পাঠের আমন্ত্রণ—
ফেব্রুয়ারি ২৬, ২০১৯
আকাশপরী
ছাতাটা সরিয়ে উপরের দিকে তাকিয়ে আজ অবশ্য কালপ্রিটকে দেখতে পেল সে, ইলেকট্রিকের তারের উপর নিশ্চিন্তে বসে আছেন তিনি। এই কুকর্মটির জন্যে তাকে মোটেই অনুতপ্ত মনে হলো না। সেতো একটি কাক মাত্র, কাউয়া— আমরা মানুষেরা নিরীহ প্রকৃতির মাথার উপর, সভ্যতার মুখে রোজই তো হাগামুতা করে চলেছি। সে জন্যে আমরা কি কখনো অনুতপ্ত?
ফেব্রুয়ারি ২৩, ২০১৯
টিকটিকির রক্ত লাল হয়ে ওঠার আগে
সে আমাকে একটা জায়গায় নিয়ে যায়।... একটা বিশাল বাড়ি, সেখানে প্রতিটি পদক্ষেপে শুধু সিঁড়ি আর সিঁড়ি। আমার শরীর উপর্যুপরি প্রশ্বাসে অবসন্ন হয়ে আসে; একটা সিঁড়ির উপর বসে পড়ি আমরা। তখন বিকেল শেষ হতে থাকে। ‘আমার ওপর কি আপনার রাগ আছে, ক্ষোভ আছে?’ শান্তা প্রশ্ন করে।
ফেব্রুয়ারি ২২, ২০১৯
অপলার গল্প
সেদিকে খেয়াল নেই মোহসিনের, কেবল পেছনে ফিরে ফিরে অপলার মিলিয়ে যাওয়া দেখছে। মার্শাল ট্রায়ালে ওর ফাঁসি হতে পারে, ছাড়াও পেয়ে যেতে পারে বা নির্মম নির্যাতনের মুখোমুখি হতে পারে সে। যুদ্ধে বিদ্রোহী সৈনিকের কপালে কি জুটতে পারে জানে মোহসিন, যে কোনো সাজা সে মাথা পেতে নেবে।
ফেব্রুয়ারি ১৯, ২০১৯

























