তোমায় পাব বলে স্বাধীনতা
শায়লা পঁচিশ বছরের একটা মেয়ে। বিবাহিত। তিন বছরের একটা ছেলে আছে, নাম স্বাধীন। সময়টা চুয়াত্তুরের শেষদিকে। বাপের পেনশনে চলে কি চলে না, তবুও চলে যায়- এভাবেই বাঙালি বেঁচে থাকে। বাড়ি ভাড়া বাকি, মুদির খাতায় পাওনার পেইজ শেষ হয়ে এসেছে। মুদি এখনও তবু ভদ্রতা রেখেছে, এই রক্ষে।
ডিসেম্বর ১২, ২০১৭
ভুল সংসার
মাথায় অসহ্য যন্ত্রণা আর একবুক তেষ্টা নিয়ে চোখ খুলল রুবি। কখন যে জ্ঞান চলে গেছিল, বোঝেনি । সেই সন্ধে থেকে চলছে মারধোর। বদরুদের ঘরের পাশের গাছটায় সে বাঁধা। টের পেল, শরীর বশে নেই । ঝুঁকে আসছে মাথাটা বুকের কাছে। ঠোঁটের পাশ কপাল চটচটে। জিভ দিয়ে চেটে দেখলো নোনতা।
ডিসেম্বর ০৯, ২০১৭
চটপটে, ছটফটে নয়
চলতে চলতে গভীর এক বনে ঢুকে পড়লেন রাজপুত্র। কিছু দূর গিয়েই তিনি অবাক হয়ে গেলেন। রূপসী এক বালিকা এসে তার ঘোড়ার লাগাম ধরল। বিস্ময়ে থ রাজপুত্র। মেয়েটি চোখ ধাঁধানো সুন্দর। এই বনের মধ্যে এই মেয়েটি কে? কী নিবিড় ছায়াঘেরা বালিকার চোখের দৃষ্টি। ভুরু দুটো যেন কাজলরেখা নদী।
ডিসেম্বর ০৪, ২০১৭
শঙ্কা
ছোট্ট ছেলেটি ঝুনঝুনি পায়ে ঘরময় ছুটে বেড়ায়। শহরের দমবন্ধ ঘরে সকালের তেড়ছা রোদের ফালি খণ্ড খণ্ড হয়ে মেঝেতে লুটোপুটি খায়। জহুরা উলের সোয়েটার বুনতে বুনতে ছেলেকে দ্যাখে। দ্যাখে আর ভাবে, সম্বিত পেয়ে আবার বোনায় মন দ্যায়।
ডিসেম্বর ০১, ২০১৭
হেমন্তের এক বিকেল
নিরাপদ একটা ছাউনির নিচে গিয়ে দাঁড়ালো পুরো দলটি। অসময়ে তাণ্ডব দেখে দলের সবাই দারুণ বিস্মিত। এ তো ঝড় নয়, ঝড়ো হাওয়া, ধুলো উড়ছে এলোপাথারি, আকশের মেঘগুলো ছুটছে খুব বেগে। চমৎকার বিকেলটি দেখতে দেখতে হয়ে উঠল অন্ধকার এক ভয়-জাগুরুক সন্ধ্যা।
নভেম্বর ৩০, ২০১৭
রেড লাইটের ভালোবাসা
এক দালাল এসে স্বভাবমতো পাকড়াও করে জিগেশ করে, কি চায়? সেলিম বেকুবের ঠায় দাঁড়িয়ে থাকে। দালাল জিজ্ঞেস করে, টাকা আছে? কত? সেলিম পকেট থেকে টাকা বের করতে করতে ওপরে তাকায়। ললিতাকে দেখতে পায়। ললিতা তারে দ্যাখে না। সে আরও বছর দুয়েক আগের কথা। তার পকেটে ৩০০ টাকা ছিল। সে হাত তুলে ললিতাকে দেখায়।
নভেম্বর ২৯, ২০১৭
এক বিন্দু অশ্রু
সায়েন্স ল্যাবরেটরির সিগন্যাল বাতিটা কি আছে? ছেলেটা ভাবে। ভাবার কি আছে, তাই না? চোখ তুলে দেখলেই তো ল্যাঠা চুকে যায়! কিন্তু চোখ তার ঝাপসা। অশ্রু না মেঘের ছায়া, সে ভেবে দেখেনি।
নভেম্বর ২৩, ২০১৭
সার্ত্রের প্রেমিকারা
শেষ প্রেমিকাটা প্রায়ই আমাকে বলতো, পাগলদের ওস্তাদ। সুতরাং আমার তো পাগলে ভয় পেলে চলে না। যদিও অল্প অল্প ভয় করছে, তবু আমি খুব শান্ত কণ্ঠে চালককে জিজ্ঞেস করলাম, কেমন আছ? ঘাড় নেড়ে সে জবাব দিল, ভালো আসি। আমি জিজ্ঞেস করলাম, বছরে খারাপ থাকো কতদিন? সে বলে, গরমের সময়।
নভেম্বর ১৭, ২০১৭
গোধূলির জাদুকর
বেশিরভাগ সময় এখন আমি ঘুমিয়ে থাকি। জেগেও থাকি কখনও কখনও। ঘুম থেকে উঠে চুপচাপ বসে আমি চারপাশ দেখি। কত কত কিছু এই পৃথিবীতে। একই মানুষের ভেতর কত কত মানুষ। কিছু সময় এইসব চেয়ে চেয়ে দেখি, এরপর মনে হয়, এই তো দেখলাম। এইবার ঘুমিয়ে পড়লেই হয়।
নভেম্বর ১৪, ২০১৭
রহস্য
রহস্য জাতীয় ব্যাপারগুলিতে আমার তেমন বিশ্বাস নেই। তবু প্রায়ই এরকম কিছু গল্প-টল্প শুনতে হয়। গত মাসে ঝিকাতলার এক ভদ্রলোক আমাকে বললেন, তার ঘরে একটা তক্ষক আছে। সেটি রোজ রাত ১টা ২৫ মিটিনে তিনবার ডাকে। আমি বহু কষ্টে হাসি সামলালাম। এরকম সময়নিষ্ঠ তক্ষক আছে নাকি এ যুগে?
নভেম্বর ১৩, ২০১৭

























