মওলানা আবদুল হামিদ খান ভাসানীর কবিতা ‘আর কত কাল’

ওরা শুরু করেছিল তোমার পায়ের নিচের মাটি থেকে, তাই প্রথমে ওরা কেড়ে নিয়েছে তোমার জমিন। দেশ নামের যে এক চিলতে জেলখানায় তুমি থাকতে, সে জমিন শত শত শহিদের ভিড়ে কবেই হয়ে গেছে মর্ত্যের জান্নাত।

আমাদের ভিটের পরে কিছু সম্মানিত বৃক্ষ আর আটচালা মাটির ঘরের কোণে একসময় দাঁড়িয়ে ছিল বিশ্বাসযোগ্য দেরাজ

`আল্লাহু আকবার, আল্লাহু আকবার।`/কী মধুর ধ্বনি শোনাও যে তুমি দৈনিক পাঁচবার/হে মুয়াজ্জিন, তোমায় সালাম, তুমি তো ভাগ্যবান।

হেয়ালি দিনে, মুদির দোকান থেকে হাজিবাজি সুখ কিনে, জেনেছি চিনেছি তাকে আজীবনই বাবার পিছন-ধরা খিলখিল কাল, টিয়া-ভরা উঠানের কাচামিঠা আমটার ডাল

দুঃখ সুখের বাঁধন হবে নিজের, মনের মতো ওকে যদি পাই তবে বাঁধতে পারি ছোট্ট নীড় পাখির কলোরবে

যতবার মনে পড়ে প্রথম দিনের দ্যাখা/সাথে করে এনেছিলে কয়েকটা লাল গোলাপ/প্রচণ্ড হাসি পায়, জানো!

দাঁড়কাক হয়ে দাঁড়িয়েছি তোমার উঠোনে সভ্যতার হারিকেনে দেখে নাও আলোহীন আমার অবয়ব

আহা ভূমধ্যসাগর, এপারে ওপারে জ্ঞান-বিজ্ঞানে সমৃদ্ধ মুসলমান বাতাসে গড়ে ওঠা আপেল-কমলা-নাশপতি বাগানে যে রোমান আধিপত্য গুড়িয়ে দিয়েছিল তোমার পূর্বপুরুষ, অ্যাসাইলামের মদে তা গুলিয়ে ফেললে পুরোটাই!