মওলানা আবদুল হামিদ খান ভাসানীর কবিতা ‘আর কত কাল’

একেলা জগৎ ভুলে পড়ে আছি নদীকূলে/পড়েছে নধর বট হেলে ভাঙা তীরে/ঝুরু ঝুরু পাতাগুলি কাঁপিছে সমীরে/চাতক কাতরে ডাকে, চরে বক নদী-বাঁকে/ডাকে কুবো কুব কুব লুকায়ে কোথায়!

রাত্রির স্নিগ্ধতা আমাকে আচ্ছন্ন করে রাখে/তুমি এসেছিলে স্বপ্নে চোখে চুমু মেখে/অসার ক্লান্তিহীন মৃত্যুর পরে/তোমার নিঃশব্দ উন্মীলন ধুয়েমুছে দেয়/মেঘহীন শ্রাবণের অখণ্ড রাত।

কাঁচা কাঁচা রোদ মাখা সকালবেলা, আকাশে ভাসালো আজ আলোর ভেলা। গাছে গাছে চিকচিক আলো হাসে ফিকফিক, চালে চালে ঝিকঝিক এ কোন্ খেলা, কাঁচা সোনা রোদ মাখা সকালবেলা।

একটা আপনি আড়ালে গেলে আরেকটা আপনি সামনে এসে দাঁড়ায়, খাড়া হয়। একটা তুমি উঁকিঝুকি পাড়ে। কথা কয়। গান গায়। তারপর ঘুমিয়ে পড়ে। আরেকটা আপনি সবুজ বাতি জ্বেলে বসে থাকে চুপচাপ।

বৃষ্টির মৌসুমে শামুকের স্মৃতি আপনাকে কতটা কাঁদায়? শুধু ঝিনুকের নাভি দেখে কেন খনন করছেন গভীর জীবন?

শ্রেণিসংগ্রাম নিয়ে আলোচনার ফাঁকে ফাঁকে তোমার দৃষ্টিভঙ্গির সাথে মিশে যাচ্ছে আমার দৃষ্টিপাত। মার্কসবাদের কী অবাক মহিমা! ব্যক্তিগত জীবনের কথা অনুক্ত রয়ে গেল, তবু প্রোলেতারিয়েত, পার্টিলাইন, অক্টোবর বিপ্লব

প্রাচীনতম মন্দিরের সব আলো নিভে গিয়েছিল; তোমার আলিঙ্গনে শুধু জ্বলছিল রডোডেন্ড্রন চোখ। সত্যযুগ হলে এখন দেবির অভিশাপে আমাকে হতে হতো কুৎসিত ওক্ গাছ আর তুমি...  লিঙ্গচ্ছিন্ন সবুজ দানব!

সকাল উদয়বিষণ্ণ মেঘলা সমুদ্রে/সিংহল ঝাপসা উঠছে নারকলবন পাহাড়মাথায়/বোটের ডেকে চলি ডাঙার দিকে, হাতে কফি-পেয়ালা/যাত্রীরা তাস-খেলায় মত্ত, সমুদ্র-আসমান-দ্বীপ জানে না