অপেক্ষা

মোহাম্মদ খালিদ সাইফুল্লাহ ফয়সল

প্রকাশিত : মার্চ ১০, ২০২০

যখন আপনি কলেজে পড়ছিলেন, তখন আপনার এক মেয়েকে পছন্দ হলো গেলো আচমকা-ই। খবর নিয়ে জানতে পারলেন মেয়েটা আপনার আত্নীয়া। বছর কয়েক আগে যখন আগে দেখেছিলেন, তখন সবেমাত্র স্কুলে ভর্তি হয়েছিলো সে।

কিন্তু, আজ এক বিয়ের আসরে তার ষোড়শী রূপে মুগ্ধ হয়ে আপনি আপনার হৃদয় হারিয়ে বসলেন!

 

অনেকটা কায়দা-কানুন মেনে নিয়ে আপনি মেয়ের হৃদয়ে জায়গা করতে চাইলেও আপনি আপনার কাজে সফল হতে পারছেন না, কিন্তু আপনি তো নাছোড়বান্দা!

 

শেষমেষ, লেগে থাকতে থাকতে একসময় মেয়েটির মনে যখন আপনি জায়গা নিয়ে নিলেন, তখন মেয়েটি সবে মাত্র ক্লাস নাইন পাস করছে করছে মাত্র। বয়ঃসন্ধিকালের প্রাগূঢ়তা আর হৃদয়ের ধুকধুকানিতে আপনার চোখের ভাসতে থাকা সমস্ত স্বপ্নগুলোকে সত্য ভেবে নিলো সে।

শুরু হলো আপনাদের স্বপ্ন-সারথি, প্রেমের পাল তোলা নৌকায় উঠে হারিয়ে যেতে লাগলেন গহীন সমুদ্রে।

 

কিন্তু, আচমকা-ই আপনাদের প্রেমের দুর্দিন নেমে এলো। অনেকটা বিনা মেঘে বজ্রপাতের মতো, পরিস্থিতি এতোটা-ই খারাপ হয়ে দাঁড়িয়েছিলো যে, দুই পরিবারের কেউ-ই কারোর চেহারা দেখতে চায় না।

 

অমানিশার ঘোর অন্ধকার ছেয়ে যাচ্ছিলো চারপাশে, উত্তাল সমুদ্রে নাবিকের যেনো নিজেদের জাহাজকে সামলাতে পারে না আপনিও তেমনভাবে বেসামাল হয়ে পড়লেন।

আর, এরপর, আসমান-জমিন বিভক্ত করে নরকের আর্তচিৎকারের কান্না আর বিষন্ন বেদনার সুর বেজে উঠলো হৃদয়ের সঙ্গীতে। যা কোনোদিন হতে পারে না, ঘটতে পারে না... এমন ঘটনা ঘটে গেলো স্বয়ং আপনার সাথে।

আপনি কিংকর্তব্যবিমূঢ় হয়ে বিহ্বল চোখে ভবিষ্যতকে দেখতে লাগলো সুখপাখি’র খোঁজ পেলেন না নিজের ভুলে। তখন, কী করবেন আপনি?

নিজেকে মেরে ফেলবেন? স্বপ্নহরণকারীকে মেরে দিবেন?

 

লেখক রেদওয়ান মাসুদ হাল-যমানার বাংলা সাহিত্যের ‘রোমান্টিক’ ঘরনায় বেশ আলোচিত একটি নাম, যিনি কী-না এ-ই ‘অপেক্ষা’ বইটি দিয়ে-ই দারুণ জনপ্রিয়তা পেয়েছেন পাঠক মহলে।

প্রকৃতপক্ষে, বইটি নিঃসন্দেহে ভালো এবং বইয়ের কাহিনীও আবেগ-ভালোবাসা আর ছেড়ে আসা সময়ের কল্পে গঠিত। হয়তও, আমি ব্যক্তিগতভাবে, আবেগি কিংবা কলেজ জীবনের প্রেমকে অনুভব করতে পারে নি বিধায়... বইটি এতোটা মনোরঞ্জন দিতে পারে নি আমায়।

 

তবে, এ কথা সত্যি যে, কলেজ জীবনে ঘটা খুনসুঁটিগুলো আচমকা সবুজ হয়ে উঠেছিলো বইয়ের অধ্যায়গুলো পড়ার পর। লেখক ‘অপেক্ষা ১’ এর পর ‘অপেক্ষা ২’ এবং ‘অপেক্ষা ৩’ দিয়ে তিনটি পর্বে শেষ করেছেন এ-ই প্রেমময় জীবনের উপাখ্যান।

সাদিয়া কিংবা নীরব, আপনি অথবা আপনার প্রেমিকা, এর জীবনে চলতে থাকা বিভীষিকার শেষ কোথায় হবে, কীভাবে তারা নিজেদের সামলে নিবে... এ-ই প্রশ্নগুলোর উত্তর আপনাদের দোদল্যুমান মনে চলতে থাকলে আপনার আমন্ত্রণ ও আহবান জানাচ্ছি আপনার স্কুল-কলেজ জীবনের ফেলে আসা প্রেম-ভালোবাসা-আবেগের মূল্যবান স্মৃতিগুলোকে আরও একবার স্মৃতিমন্থর করে তোলার।

 

বইপ্রেমী, রোমান্টিকপ্রেমী এবং সব সাহিত্যপ্রেমীদেরকে বাংলা সাহিত্যের বেশ দারুণ এক কাহিনী পড়ার জন্য সাদর আমন্ত্রণ জানাচ্ছি।

একুশে বইমেলা ২০১৮