উপজেলায় এমপি-মন্ত্রীর স্বজনরা প্রার্থী হলে কঠোর ব্যবস্থা

এমপি-মন্ত্রীদের নিকটাত্মীয় ও পরিবারের সদস্যরা প্রার্থী হলে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়া হবে বলে জানিয়েছেন আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের। আজ বৃহস্পতিবার ধানমন্ডিতে দলের সভাপতির রাজনৈতিক কার্যালয়ে দলের বিভাগীয় দায়িত্ব পাওয়া নেতাদের সঙ্গে অনির্ধারিত বৈঠক তিনি একথা জানান।

বৈঠকে উপস্থিত ছিলেন আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক বিএম মোজাম্মেল হক, মির্জা আজম, আফজাল হোসেন, দপ্তর সম্পাদক বিপ্লব বড়ুয়া, উপ দপ্তর সম্পাদক সায়েম খান প্রমুখ। এসময় দলের সভাপতি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নির্দেশনা বিভাগীয় দায়িত্ব পাওয়া নেতাদের কাছে তুলে ধরেন ওবায়দুল কাদের।

তিনি বলেন, “যেসব এমপি-মন্ত্রীরা নির্বাচনে প্রভাব সৃষ্টি করছেন এবং পরিবার ও নিকটাত্মীয়দের প্রার্থী করছেন তাদের তালিকা তৈরি করতে হবে।”

বৈঠকে থাকা একাধিক নেতা জানান, নির্বাচনে হস্তক্ষেপ না করার জন্য দলের প্রেসিডিয়াম সদস্য আবদুর রাজ্জাক, শাহাজান খান, নোয়াখালীর এমপি একরাম সহ বেশ কজনকে তাৎক্ষণিক বৈঠক থেকে সতর্কবার্তা দেওয়া হয়।

আওয়ামী লীগের দপ্তর সূত্রে জানা গেছে, উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে আওয়ামী লীগ দলীয় মনোনয়ন দিচ্ছে না। এটা দলীয় সিদ্ধান্ত। নির্বাচন অংশগ্রহণমূলক ও প্রতিযোগিতাপূর্ণ করতে এ সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। কেউ যেন নির্বাচনের পরিবেশ নষ্ট করতে না পারে, সে বিষয়ে শুরু থেকে কঠোর বার্তা দেওয়া হচ্ছে দলের পক্ষ থেকে।

কিন্তু এখন দেখা যাচ্ছে, দলের প্রভাবশালী নেতারা ও  স্থানীয় এমপি-মন্ত্রী স্ব-স্ব  নির্বাচন এলাকায় তাদের আত্মীয়-স্বজন পরিবারের সদস্যদের প্রার্থী করছেন। এ কারণে দলের তৃণমূলে চেইন অফ কমান্ড ভেঙে পড়েছে। দলীয় নেতা-কর্মীদের মধ্যে বিভক্তি দেখা দিয়েছে। সংঘাত সহিংসতা হচ্ছে। এমপি-মন্ত্রী প্রশাসনের ওপর খবরদারি করছে।

এ অবস্থায় দলীয় সভাপতি প্রধানমন্ত্রীর শেখ হাসিনা নির্দেশনা দিয়েছেন, যেসব এমপি-মন্ত্রী পরিবারের সদস্যরা নির্বাচন করছেন, তারা নির্বাচন করতে পারবে না।  এ বিষয়ে নেত্রী দলের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদেরকে নির্দেশনা দিয়েছেন।

বৈঠক সূত্রে জানা গেছে, উপজেলা পরিষদ নির্বাচন নিয়ে আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় বেশিরভাগ নেতাদের অভিমত ছিল, প্রতীক বরাদ্দের কারণে দলের তৃণমূল গ্রুপিং বাড়ছে। এ কারণে প্রতীক বাদ দেওয়া হয়েছে। ফলে আওয়ামী লীগ প্রতীক রাখেনি।

আওয়ামী লীগ স্থানীয় পর্যায়ের রাজনীতিতে ভারসাম্য রাখতে চায়, ঐক্য রাখতে চায়। দল চায় না নির্বাচন কেন্দ্র করে দলের মধ্যে কোন্দলের সৃষ্টি হোক, দলীয় নেতা-কর্মীদের সঙ্গে এমপি-মন্ত্রীদের দূরত্ব সৃষ্টি হোক। কিন্তু বাস্তব চিত্র ভিন্ন। যেখানে দল মনোনয়ন দিচ্ছে না, সেখানে নেতারা খবরদারি করছেন। আধিপত্য বিস্তার ও মাইম্যান সৃষ্টির চেষ্টা করছেন।

এমপি-মন্ত্রীরা নিজের প্রভাব বৃদ্ধির জন্য ও আধিপত্য বিস্তারের জন্য যে রাজনীতি আওয়ামী লীগ তা পছন্দ করছে না। এটা নিয়ন্ত্রণে জন্য এরই মধ্যে সাংগঠনিক সম্পাদকদের নির্দেশনা দিয়েছেন ওবায়দুল কাদের।

দলীয় সূত্রে জানা গেছে, যারা নিকটাত্মীয়দের দিয়ে নির্বাচন করাচ্ছেন, তাদের তালিকা করা হচ্ছে।  প্রয়োজনে তাদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়া হবে। কেউ দলীয় নির্দেশনা না মানলে তাদের বিরুদ্ধে সংগঠনের গঠনতন্ত্র অনুযায়ী ব্যবস্থা নেওয়া হবে।