গজলশিল্পী জগজিৎ সিংয়ের আজ জন্মদিন
ছাড়পত্র ডেস্কপ্রকাশিত : ফেব্রুয়ারি ০৮, ২০২১
গজলশিল্পী, সুরস্রষ্টা, সংগীত পরিচালক ও সমাজকর্মী জগজিৎ সিংয়ের আজ জন্মদিন। জন্মগত নাম জগমোহন সিং। ১৯৪১ সালের ৮ ফেব্রুয়ারি তার জন্ম। তার স্ত্রী চিত্রা সিংও বিশিষ্ট গজল গায়িকা।
১৯৭০ ও ১৯৮০ এর দশকে জগজিৎ ও চিত্রা সিং ভারতীয় সংগীত জগতে প্রায় একই সঙ্গে খ্যাতনামা হয়ে ওঠেন। তাদের দুজনকে আধুনিক গজল সংগীতের পথপ্রদর্শক মনে করা হয়।
ভারতের ফিল্মি গানের ধারার বাইরে থেকেও তারা ছিলেন অত্যন্ত জনপ্রিয় সংগীতশিল্পী। অর্থ (১৯৮২) ও সাথ সাথ ছবিতে ব্যবহৃত তাদের গাওয়া গজলের সংকলন এইচএমভি থেকে প্রকাশিত হয়; এটি ছিল তাদের সর্বাধিক বিক্রীত অ্যালবাম।
লতা মঙ্গেশকরের সঙ্গে তিনি প্রকাশ করেন সাজদা (১৯৯১) অ্যালবামটি। তিনি পাঞ্জাবি, হিন্দি, উর্দু, বাংলা, গুজরাটি, সিন্ধি ও নেপালি ভাষাতেও গান গান।
২০০৩ সালে সংগীত ও সংস্কৃতি জগতে অবদানের জন্য তাকে ভারতের তৃতীয় সর্বোচ্চ অসামরিক সম্মান পদ্মভূষণ দিয়ে সম্মানিত করা হয়। গজল ভারতীয় শাস্ত্রীয় সংগীতের একটি জটিল ধারা। সিং গজলের সঙ্গে ‘গীত’ ধারার মিশ্রণ ঘটিয়ে এই ধারাটিকে সরল করে তোলেন। ফলে গজল পুনরায় জনপ্রিয় হয়ে ওঠে।
প্রেমগীত (১৯৮১), অর্থ ও সাথ সাথ (১৯৮২) চলচ্চিত্রে এবং টিভিসিরিয়াল মির্জা গালিব (১৯৮৮) ও কহকশানে (১৯৯১) গজল গেয়ে তিনি জনপ্রিয়তা পান। বাণিজ্যিক দিক থেকেও তিনি ছিলেন একজন সফল গজল শিল্পী। প্রায় পাঁচ-দশকব্যাপী সংগীতজীবনে তিনি ৮০টি অ্যালবাম প্রকাশ করেন।
তার নয়ি দিশা (১৯৯৯) ও সমবেদনা (২০০২) ছিল ভারতের প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রী তথা বিশিষ্ট হিন্দি কবি অটলবিহারী বাজপেয়ীর লেখা গানের সংকলন। জগজিৎ ও চিত্রা সিং প্রথম ভারতীয় সুরস্রষ্টা যিনি ডিজিটাল মাল্টি-ট্র্যাক রেকর্ডিং পদ্ধতিতে গান রেকর্ড করেন। এই পদ্ধতিতে রেকর্ড করা তাদের প্রথম অ্যালবামটি ছিল বিয়ন্ড টাইম (১৯৮৭)।
রবিশঙ্কর ও অন্যান্য সংগীতশিল্পী ও সাহিত্যিকদের সঙ্গে তিনি ভারতীয় শিল্প ও সংস্কৃতির রাজনীতিকরণের বিরুদ্ধে আন্দোলনে সামিল হন। শাস্ত্রীয় ও লোকশিল্পীদের তিনি নানাভাবে সাহায্য করতেন। মুম্বইয়ের সেন্ট মেরি স্কুলের লাইব্রেরি নির্মাণ, বম্বে হসপিটাল গঠন এবং ক্রাই, সেভ দ্য চিলড্রেন ও আলমা প্রভৃতি সংগঠনের কাজকর্মেও তিনি প্রত্যক্ষভাবে সাহায্য করেন।
বয়সজনিত কারণে জগজিৎ সিং প্রায়ই হৃদরোগের চিকিৎসা নিতেন। এছাড়া উচ্চ রক্তচাপেরও সমস্যা ছিল তার। মস্তিষ্কের রক্তক্ষরণজনিত গুরুতর সমস্যায় তাকে ভারতের মুম্বাইয়ের লীলাবতী হাসপাতালের নিবিড় পরিচর্যা কেন্দ্র বা আইসিইউতে ভর্তি করা হয়েছিল। ২০১১ সালের ১০ অক্টোবর ওই হাসপাতালেই চিকিৎসাধীন অবস্থায় ৭০ বছর বয়সে তার মৃত্যু হয়।
























