গ্লকোমায় হতে পারে স্থায়ী অন্ধত্ব

ছাড়পত্র ডেস্ক

প্রকাশিত : মার্চ ২৫, ২০২৪

অন্ধত্বের দ্বিতীয় কারণ গ্লকোমা। এটি আসলে চোখের অনেক সমস্যার সমষ্টি। ফলে চোখের মধ্যে থাকা ও দৃষ্টিশক্তির সঙ্গে সম্পর্কযুক্ত স্নায়ুগুলো ক্ষতিগ্রস্ত হয়।

দেশের ১০ শতাংশ মানুষের গ্লকোমা হওয়ার প্রবণতা রয়েছে। এ মুহূর্তে দেশে গ্লকোমা আক্রান্ত রোগীর সংখ্যা ২৫ লাখ ৫০ হাজার। গ্লকোমা সাধারণত দুই চোখে একসঙ্গে হয়।

উপসর্গ
রোগটির প্রাথমিক পর্যায়ে তেমন উপসর্গ না থাকায় রোগী বুঝতে পারেন না যে, তিনি ধীরে ধীরে অন্ধত্বের দিকে এগিয়ে যাচ্ছেন। ৭০ থেকে ৮০ শতাংশ দৃষ্টিশক্তি কমে যাওয়ার পরে রোগীরা বুঝতে পারেন।

এই রোগের প্রথম উপসর্গটি হলো পার্শ্ববর্তী দৃষ্টি প্রায় হারিয়ে ফেলা। এছাড়া—

ঘন ঘন চশমার গ্লাস পরিবর্তন হওয়া।
চোখে ঝাপসা দেখা বা আলোর চারপাশে রংধনুর মতো দেখা।
ঘন ঘন মাথাব্যথা বা চোখে ব্যথা হওয়া।
দৃষ্টিশক্তি ধীরে ধীরে কমে আসা বা দৃষ্টির পারিপার্শ্বিক ব্যাপ্তি কমে আসা।
কম আলোয় কাজ করলে চোখে ব্যথা অনুভূত হওয়া।
চোখে লাল ভাব।
বমি বমি ভাব এবং বমি করা।

কারণ
এই রোগের সুনির্দিষ্ট কোনো কারণ খুঁজে পাওয়া না গেলেও চোখের উচ্চচাপকে রোগটির প্রধান কারণ বলে ধরে নেওয়া হয়। তবে চোখের স্বাভাবিক চাপেও এই রোগ হতে পারে। পরিবারের অন্য কোনো নিকটাত্মীয়, যেমন মা-বাবা, দাদা-দাদি, নানা-নানি, চাচা, মামা, খালা বা ফুপুর এই রোগ থাকলে বয়স চল্লিশের বেশি হলে কিংবা ডায়াবেটিস, উচ্চরক্তচাপ থাকলে, স্টেরয়েড ওষুধ দীর্ঘদিন সেবন করলে, চোখে ছানি অপারেশন না করলে বা করাতে দেরি হলে অথবা চোখে জন্মগত ত্রুটি থাকলে আক্রান্ত হওয়ার ঝুঁকি বহুগুণে বেড়ে যায়।

চোখে ড্রপ ব্যবহার করা।
মুখে ওষুধ সেবন করা।
লেজার থেরাপি।
সার্জারি।

প্রতিরোধ
নিয়মিত চক্ষু পরীক্ষা করুন।
আপনার পারিবারিক ইতিহাস সম্পর্কে জানুন, যাদের বয়স ৪০ বছরের বেশি এবং যাদের গ্লুকোমার পারিবারিক ইতিহাস রয়েছে, তাদের প্রতি এক বা দুই বছর অন্তর চোখ পরীক্ষা করার পরামর্শ দেওয়া হয়।

জিংক, কপার, সেলেনিয়াম ও ভিটামিন এ, ই, সি সমৃদ্ধ খাবার খেতে হবে।
কফি পানের পরিমাণ কমাতে হবে।
একবারেই বেশি করে পানি খাওয়া যাবে না বরং অল্প করে পানি বারবার খেতে হবে।
শরীরের অতিরিক্ত ওজন নিয়ন্ত্রণে রাখতে হবে।
চোখের প্রেশার বেশি থাকলে চিকিৎসক যেভাবে ব্যবস্থাপত্র দেবেন, সেটা মেনে চলতে হবে।

মনে রাখবেন, গ্লকোমা অন্ধত্বের প্রধান কারণ। এর কোনো প্রতিকার নেই, প্রতিরোধই একমাত্র উপায়। চল্লিশের বেশি বয়সে একজন চক্ষু বিশেষজ্ঞ দিয়ে চোখ পরীক্ষা করিয়ে চোখের প্রেশার জেনে নিন।