জ্যোতির্বিদ নির্মলচন্দ্র লাহিড়ীর আজ জন্মদিন
ছাড়পত্র ডেস্কপ্রকাশিত : অক্টোবর ০৪, ২০২৫
জ্যোতির্বিদ নির্মলচন্দ্র লাহিড়ীর আজ জন্মদিন। ১৯০৬ সালের ৪ অক্টোবর রংপুরে তার জন্ম। পিতা হরিশ্চন্দ্র লাহিড়ী। ১৯২৮ সালের রংপুরের কারমাইকেল কলেজ থেকে বি.এ. পাশের পর ১৯৩৩ সালে তিনি কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে মিশ্র গণিতে এম.এ. পাশ করেন।
এম. এ. পাশের পর ১৯৩৪ সালে তিনি ভারত সরকারের বাণিজ্যিক সংবাদ ও সংখ্যাতত্ত্ব বিভাগে কাজ পান এবং ১৯৫৩ সাল পর্যন্ত সেখানেই কর্মরত ছিলেন। এরপর প্রখ্যাত জ্যোতির্বিজ্ঞানী মেঘনাদ সাহার সভাপতিত্বে ক্যালেন্ডার রিফর্মস কমিটি গঠিত হলে নির্মলচন্দ্র সেই কমিটির সম্পাদক হন এবং আলিপুরের অ্যালম্যানাক ইউনিটে কর্মরত হন।
রাষ্ট্রীয় পঞ্চাঙ্গের সংস্কার ছাড়াও কমিটির উদ্দেশ্য ছিল, সময় গণনার ক্ষেত্রে প্রাচীন অবৈজ্ঞানিক পদ্ধতির বদলে আধুনিক বিজ্ঞানসম্মত পদ্ধতির প্রচলন ঘটানো। ১৯৫৫ সালে এই কমিটির কাজ শেষ হলে ভারত সরকারের অন্য একটি পরিকল্পনায় `ভারতীয় পঞ্জিকা ও নৌ-সারণি` প্রস্তুতির মতো মৌলিক গবেষণামূলক কাজের ও ভারতের বিভিন্ন ভাষায় জ্যোতিষভিত্তিক পঞ্জিকা প্রকাশনার দায়িত্ব প্রাপ্ত হন।
১৯৫৬ সালে তিনি প্যারিসে আন্তর্জাতিক জ্যোতির্বিদ্যা ইউনিয়নের পঞ্চাঙ্গ বা পঞ্জিকা কমিটির সদস্য পদ লাভ করেন। ভারতীয়দের মধ্যে তিনিই প্রথম এই গৌরবের অধিকারী। ১৯৭০ সালে সরকারি চাকরি থেকে অবসর গ্রহণ করেন। অবসরের পরও তিনি জ্যোতির্বিদ্যা চর্চাতে ব্যাপৃত ছিলেন। বিভিন্ন ধরনের পঞ্জিকা ও গ্রন্থ প্রকাশ করেন।
তার রচিত গ্রন্থগুলি হলো: পঞ্চাঙ্গ দর্পন, Tables of Ascendants, Tables of the Sun, Advance Ephermeris for 100 years (1951-2050), Tables of Sunrise, Sunset and Moonrise, Moonset.
১৮৯০ সালে প্রযুক্তিবিদ মাধবচন্দ্র চট্টোপাধ্যায় প্রকাশিত বিশুদ্ধ সিদ্ধান্ত মতে বাংলা পঞ্জিকার সাথে বিজ্ঞানসম্মত মিল পাওয়া যায়। কিন্তু তার প্রচলন ছিল না। মূলত নির্মলচন্দ্র লাহিড়ীর উদ্যোগেই বিশুদ্ধ সিদ্ধান্ত মতে বাংলা পঞ্জিকার গ্রহণযোগ্যতা বৃদ্ধি পায়। ১৯৭৬ সালে তিনি পুত্র অরুণকুমার লাহিড়ীকে সঙ্গে নিয়ে কলকাতার ১৭ বৃন্দাবন মল্লিক ফার্স্ট লেনে ‘অ্যাস্ট্রো রিসার্চ ব্যুরো’ তৈরি করে ষষ্ঠীচরণ জ্যোতির্ভূষণের সহায়তায় বিশুদ্ধ সিদ্ধান্ত পঞ্জিকার প্রকশনার ভার গ্রহণ করেন।
জ্যোতির্বিদ্যায় অবদানের জন্য কাঞ্চীপুরমের শঙ্করাচার্য তাকে `গণিতকলানিধি` উপাধি প্রদান করেন। নির্মলচন্দ্র লাহিড়ী ১৯৮০ সালের ৩ জানুয়ারি ৭৪ বৎসর বয়সে কলকাতায় পরলোক গমন করেন।























