ডেঙ্গু মোকাবিলায় হাসপাতাল প্রস্তুত রাখার নির্দেশ স্বাস্থ্যমন্ত্রী

ছাড়পত্র ডেস্ক

প্রকাশিত : মার্চ ১৯, ২০২৪

ডেঙ্গু মোকাবিলায় দেশের সব হাসপাতাল প্রস্তুত রাখতে সংশ্লিষ্টদের নির্দেশ দেওয়া হচ্ছে বলে জানিয়েছেন স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রী ডা. সামন্ত লাল সেন। মঙ্গলবার সচিবালয়ে এক সভা শেষে স্বাস্থ্যমন্ত্রী এ কথা জানান।

স্বাস্থ্যমন্ত্রী বলেন, “ডেঙ্গু মোকাবিলায় দেশের সব হাসপাতাল প্রস্তুত রাখতে সংশ্লিষ্টদের নির্দেশ দেওয়া হচ্ছে। ২৩ বছরে দেশে মোট ডেঙ্গুতে আক্রান্ত রোগী ছিল প্রায় আড়াই লাখ। কিন্তু ২০২৩ সালে মাত্র এক বছরেই রোগী আক্রান্ত হয় প্রায় ৩ লাখ। এ সংখ্যা শুধু হাসপাতালে ভর্তিকৃতদের। এর বাইরে ডেঙ্গু রোগে আরও আক্রান্ত হয়েছিল।”

তিনি আরও বলেন, “ডেঙ্গু রোগী নিয়ে আমাদের এবার আগে থেকেই সতর্ক না হয়ে উপায় নেই। ডেঙ্গু প্রতিরোধ করতে হলে আমাদেরকে একদিকে মশা মারতে হবে, অন্যদিকে প্রাদুর্ভাব কমাতে আগে থেকেই সতর্ক ও সচেতন থাকতে হবে। মশা মারার জন্য ওষুধ যেমন মানসম্পন্ন কিনতে হবে, তেমনি আমাদেরকে ভালো ট্রিটমেন্ট ব্যবস্থাও রাখতে হবে।”

ডেঙ্গু ও চিকুনগুনিয়া নির্মূলে করণীয় বিষয়াদি নিয়ে ঢাকার দুই সিটি করপোরেশনের সঙ্গে আন্তঃমন্ত্রণালয় সভা করে স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রণালয়। সভায় স্বাস্থ্য প্রতিমন্ত্রী ডা. রোকেয়া সুলতানা ঢাকা সিটি করপোরেশনকে লক্ষ্য করে বলেন, “সিটি কর্পোরেশন থেকে প্রতিটি বাড়ি বাড়ি গিয়ে লার্ভার তথ্য জানতে হবে। নিয়ম না মানলে জরিমানার ব্যাবস্থা করতে হবে। স্বাস্থ্যসেবায় যারা বাধা হবে তাদেরকে জরিমানা করাসহ কঠোর নিয়ম হাতে নিতে হবে।”

ঢাকা সিটি করপোরেশন দক্ষিণের মেয়র ফজলে নূর তাপস বলেন, “ডেঙ্গু আক্রান্ত সব রোগীর সময়মতো চিকিৎসা সেবা দিতে হবে। কোনো রোগীকে চিকিৎসা না দিয়ে হাসপাতাল থেকে বাড়িতে পাঠানো যাবে না। ২০২৩ সালের ডেঙ্গুতে নারী ও শিশু বেশি কেন মারা গেল সেটি নিয়ে গবেষণা করে ব্যবস্থা নিতে হবে। আর, মানুষকে সঠিক তথ্য জানাতে হবে।”

ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশনের মেয়র আতিকুল ইসলাম বলেন, “আমরা প্রথমে বিটিআই (মশার ওষুধ) এক ঠিকাদারের মাধ্যমে এনেছিলাম। এটার মূল্য ছিল ৮৫ লাখ টাকা। এটা টেস্ট কেস হিসেবে চেয়েছিলাম। যে ঠিকাদার নিয়ে এসেছেন তিনি এটাকে মিস ডিক্লেয়ারেশন করেছেন এবং যা ইচ্ছে তাই করেছেন। যা নিয়ে সোশ্যাল মিডিয়ায় আমাদের সমালোচনা হয়েছে।”

তিনি আরও বলেন, “৫ টনের মূল্য ছিল ৮৭ লাখ টাকা। সেই ৫ টন বিটিআই আদালতের নির্দেশনার কারণে ব্যবহার করিনি। যে ঠিকাদার এ কাজ করেছেন তিনি একবার জেলেও গিয়েছেন। এজন্য এবার ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশন সরাসরি বিটিআই আমদানি করতে যাচ্ছে। আমরা আমাদের কাজ চালিয়ে যাচ্ছি। গুলশান লেক যেদিন প্রথম পরিষ্কার করি সেখান থেকে কোটি কোটি মশা বের হয়ে গেছে।”

আতিকুল ইসলাম বলেন, “আগামীকাল যাব উত্তরায়, রাজউকের প্রত্যেকটি খাল পরিষ্কার করার জন্য। ডেঙ্গু প্রতিরোধে সবাইকে দায়িত্ব নিতে হবে। আপনারা দেখেছেন, পেট্রোবাংলার নিচে থেকে লার্ভিসাইড পেয়েছি, জরিমানা করেছি ৫ লাখ টাকা।”

সভার শুরুতে বাংলাদেশে ডেঙ্গু রোগের প্রাদুর্ভাব ও নানাবিধ সমস্যা তুলে ধরে মূল প্রবন্ধ তুলে ধরেন স্বাস্থ্য অধিদফতরের অতিরিক্ত মহাপরিচালক (পরিকল্পনা) অধ্যাপক মীরজাদি সেব্রিনা ফ্লোরা। এতে আরও উপস্থিত ছিলেন স্বাস্থ্যসেবা বিভাগের সচিব মো. জাহাঙ্গীর আলম, স্বাস্থ্য অধিদফতরের মহাপরিচালক এবিএম খুরশীদ আলম, বিএমএ সভাপতি ডা. মোস্তফা জালাল মহিউদ্দিন, প্রধানমন্ত্রীর ব্যক্তিগত চিকিৎসক প্রফেসর ডা. এবিএম আবদুল্লাহ, স্বাচিপ সভাপতি অধ্যাপক জামাল উদ্দিন চৌধুরী, বিএসএমএমইউর উপাচার্য ডা. শারফুদ্দিন আহমেদ প্রমুখ।