তানভীর রাতুলের চিলতে গল্প ‘চামে চিক্কনে’

প্রকাশিত : আগস্ট ০৯, ২০২২

সুবোধ গোমেজ আসলে ভাবছে, সে পালিয়ে যাবে কোথায়! পাশে বসে থাকা সুমাইয়ার নিকাব না নামানো নিয়ে অন্যদিন হলে এতক্ষণে সে যে মন্তব্য বা প্রশ্নটা করতো, সেটাও এখনো সে করেনি।

সুবোধকে খোঁচাতে ভালো লাগলেও, আজ ওর নির্লিপ্ততায় সুমাইয়ার ভেতরে পথে কাঁটা দেয়া বুড়ির অনুপস্থিতির মতো চিন্তারেখা জন্মায়।

সুবোধের সাথে পরিচয় হওয়ার আগে সুমাইয়ার প্রেম ছিল বীথির সাথে। বীথি সুমাইয়াকে ব্যথা দিয়েছে অনেক, তবে শরীরের চেয়ে মনেই বেশি।

সুমাইয়া চাইলেই এখনো বীথির সাথে যোগাযোগটা বজায় রাখতে পারে, সুবোধ বিষয়টাতে বাধাও দেবে না, তবে সম্পর্ক অব্যাহত না রাখাটা একান্তই সুমাইয়ার নিজস্ব স্বাধিকার থেকে গড়ে ওঠা একটি সিদ্ধান্ত। এই ছেলেটাকে সুমাইয়ার পছন্দ কারণ সে কোথায় যেন লিখেছিল যে, নারীরা যদি ভালোবাসা, প্রেমে পড়া, প্রেম করা এবং এজাতীয় আরও কিছু ভাষা এবং ধারণা দিয়ে আক্রান্ত হওয়া বন্ধ করে দেয় তবে তারাও পুরুষদের মতো ক্ষমতায়িত হবে।

ওরা দুজনই একে অপরের দিকে একদৃষ্টিতে তাকিয়ে আছে অথবা দুজনের কোনো একজন চোখে চোখ রাখার মতো মনোবল জোগাড় করতে পারছে না।

সুমাইয়ার এইজাতীয় পোশাকগুলো কিভাবে খুলতে হয় তা তুড়ির মতো একটানে নারীদের বক্ষবন্ধনি খোলার অভিজ্ঞতাসম্পন্ন সুবোধেরও বোধের বাইরে।

তারপরও কি এক উপায়ে যেন সুমাইয়া তার গলার একপাশের একটু নিচে আরেক স্তনের একটু ওপরের জায়গাটা বের করে ফেলেছে এই অতিঅল্পবিস্তর বৃক্ষ আর বিষণ্ণ বিনোদনের নগরীর ছেদবিন্দুটাতে।

নিজের নাম সেখানে দেখে সুবোধের অবোধ হাসিটা স্বল্প সময়ের হলেও, পরক্ষণের চুম্বনটা অনেক দীর্ঘ সময় জুড়েই হবে। পেছনে দর্শনার্থীদের ভিড় কি একটা থান পাথরের দালানে, শব্দ থাকলেও মানুষের স্বাধীনতা থাকে না এখানে।

সুবোধ কাজশেষে বানানো বিড়িটা ধরায় ডানহাতে আর পানির বোতলটা থেকে পান করে বামহাতে।