প্রকৃতি ও পরিবেশে রক্ষায় পাঞ্জেরীর ইন্টারঅ্যাক্টিভ সিরিজ

মারিয়া সালাম

প্রকাশিত : মার্চ ০৫, ২০২৩

আমাদের চারপাশের প্রকৃতি ও পরিবেশ নিয়েই আমাদের জীবন। প্রকৃতির প্রতিটি উপাদান আমাদের জীবনচক্র স্বাভাবিক প্রক্রিয়ায় পরিচালনার জন্য অপরিহার্য। কিন্তু প্রকৃতি ও পরিবেশের প্রতি চরম উদাসীনতা আমাদের এগিয়ে নিয়ে যাচ্ছে ভয়াবহ বিপর্যয়ের দিকে। অথচ সামান্য একটু সচেতনতা আমাদের চারপাশের প্রাকৃতিক পরিবেশের ওপরে ইতিবাচক প্রভাব ফেলতে পারে।

 

বড়দের পাশাপাশি আমাদের ভবিষ্যৎ প্রজন্মকেও পরিবেশের বিপর্যয়ের বিষয়ে সচেতন হতে হবে। লেখকের সেই অনুভবের জায়গা থেকেই পাঞ্জেরী প্রকাশনী এনেছে তাদের `প্রকৃতি ও পরিবেশ` সিরিজের শিশুদের জন্য শিক্ষামূলক দুটি বই `চিমনি ও একটি পাখি` এবং `বোতল বাসা`।

 

প্রকৃতি ও পরিবেশ বিপর্যয়, জলবায়ু পরিবর্তন, পৃথিবীর নিজেকে পুনরুদ্ধার, পরিবেশের জন্য ক্ষতিকর দ্রব্যের পুনরায় ব্যবহার বা বর্জন ইত্যাদি গুরুত্বপূর্ণ বিষয়গুলো শিশুদের জন্য বিভিন্ন সহজ গল্পের মাধ্যমে তুলে ধরা হবে এই সিরিজটিতে।

 

চিমনি ও একটি পাখি
বিপর্যয়ের হাত থেকে রক্ষা পেতে প্রকৃতি নিজেই নিজেকে তার ইকো সিস্টেমের মাধ্যমে পুনরুদ্ধার Self Restoration Process করে এবং আবার আগের মতো সমৃদ্ধ করে। এই ধারণা ওপর ভিত্তি করে লেখা হয়েছে `চিমনি ও একটি পাখি`।

 

বোতল বাসা
প্রকৃতিকে বিপর্যয়ের হাত থেকে রক্ষা করতে আমাদের নানারকম ভূমিকা পালন করতে হয়। এই প্রক্রিয়াকে বলে অন্যকারো মাধ্যমে পুনরুদ্ধার Through someone restoration হয়ে ক্ষতির হাত থেকে নিজেকে রক্ষা করা। এই ধারণাটি নিয়ে লেখা হয়েছে `বোতল বাসা`। এই বইটির আরেকটি দিক হলো, ফেলে দেয়া বা পরিত্যক্ত দ্রব্যের পুনরায় সৃজনশীল ব্যবহার Recycling process।

 

ছোটদের কথা চিন্তা করে বই দুটির ইলাস্ট্রেশনে নিয়ে আসা হয়েছে একটু ভিন্নতা। রং, ড্রয়িং ও কম্পোজিশনে যেমন আছে সমসাময়িকতার ধারার ব্যবহার আবার কমিক বইয়ের প্যানেলের সাথে গল্পের বর্ণনা যুক্ত করে আনা হয়েছে নতুন বিন্যাসের মাত্রা। বই দুটি ৬ বছরের শিশু থেকে শুরু করে সব বয়সী শিশু-কিশোরদের জন্যও প্রযোজ্য। এই সিরিজের বইগুলোতে পরীক্ষামূলকভাবে তথ্য প্রযুক্তির কিছু নতুন ধারার সংমিশ্রণ ঘটিয়ে ইন্টারঅ্যাক্টিভ বুক হিসেবে তৈরি করা হয়েছে।

 

তাই কিউআর কোড ব্যবহার করা হয়েছে, সেখানে স্মার্টফোনের কিউআর কোড স্ক্যানার বা গুগল লেন্স দিয়ে স্ক্যান করে সেই ইলাস্ট্রেশনের উপর ফোনটি ধরে রাখলে পাঠক বই দুটির গল্প AR বা Augmented Reality মাধ্যমে দেখতে ও শুনতে পারবে। এছাড়া সিরিজের গল্পগুলিকে কিছুদিনের মধ্যে পর্যায়ক্রমে অ্যানিমেটেড মোশন বুক, অডিও বুক ও ছোট ছোট শিক্ষণীয় গেমসের মাধ্যমে প্রকাশ করা হবে, যা বইগুলিতে থাকা একই QR Code স্ক্যান করলেই পেয়ে যাবে।

 

এই ধারার বইগুলো আমাদের ক্ষুদে পাঠকদের পড়ার সাথে সাথে ভাবনার জগৎকেও আরো সমৃদ্ধ করে তুলবে।

 

‘বোতল বাসা’ ও ‘চিমনি ও একটি পাখি’ বই দুটি লিখেছেন মুশফিক রনো। ছবিও এঁকেছেন তিনি। এ বছর অমর একুশে গ্রন্থমেলায় বই দুটি প্রকাশ করে পাঞ্জেরী পাবলিকেশন্স।

 

মুশফিক আখতার রনো একজন ইলাস্ট্রেটর ও ভিজ্যুয়াল ডেভলোপমেন্ট আর্টিস্ট। পেশাগত জীবনে তিনি সহকারী অধ্যাপক হিসেবে যুক্ত রয়েছেন বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয় শান্তা-মারিয়ম ইউনিভার্সিটি অব ক্রিয়েটিভ টেকনোলজির গ্রাফিক ডিজাইন ও মাল্টিমিডিয়া বিভাগে। অনেক দিন থেকেই তিনি ছোটদের বইয়ের ইলাস্ট্রেশন করছেন। কিন্তু এই প্রথম নিজের গবেষণার অংশ হিসেবে শিশুসাহিত্যিক হিসেবে তারা যাত্রা শুরু। সম্প্রতি শিশুতোষ গল্প লেখক হিসেবেও তিনি নিজেকে প্রকাশ করেছেন। দীর্ঘদিন ধরে যুক্ত রয়েছেন প্রিন্ট ও ডিজিটাল বিজ্ঞাপন মিডিয়ার সাথে। স্নাতক ও সম্মান ডিগ্রি অর্জন করেছেন গ্রাফিক ডিজাইন বিভাগ, চারুকলা অনুষদ, রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় থেকে। বর্তমানে তিনি একই অনুষদে এমফিল ফেলো হিসেবে গবেষণারত।

 

ছোটদের বিভিন্ন ধরনের গল্পের বইয়ের ইলাস্ট্রেশন নিয়ে কাজ করছেন অনেকদিন থেকেই। আর সেই সাথে তার এমফিল গবেষণার অংশ হিসেবে ইন্টারএ্যাক্টিভ বুক ও ডিজাইন নিয়েও সমানভাবে কাজ করে চলেছেন, যার অন্যতম সংমিশ্রণ ও সংযোজন দেখা যাবে এই প্রকৃতি ও পরিবেশ বইয়ের সিরিজে।

একুশে বইমেলা ২০১৮