বিবি সাজেদার গদ্য ‘বালের জীবন’

প্রকাশিত : জানুয়ারি ০৪, ২০২২

বালের জীবন।
কলেজ পেরিয়ে ভার্সিটিতে উঠলে একটা প্রেম করা।
প্রেম করার জন্যই প্রেম করা।
মেয়েটা কড়া মেকাপ, শাড়ি আর সাজগোজ দিয়ে ছেলেটার মন ভুলাতে চাইবে আর ছেলেটা মাঝে মাঝে কিছু গিফট, ঘুরতে নিয়ে যাওয়া এবং লাভু বলে মুখে ফেনা তুলে তুলে মেয়েটিকে ম্যানেজ করতে চেষ্টা করবে।
মাঝে মাঝে সুযোগ পেলে কারো ফাঁকা ফ্ল্যাটে জৈবিক প্রয়োজনে মিলিত হবে। ওতে না থাকবে গভীর কোনো মানসিক প্রশান্তি।
বিয়ের পরের জীবন তো আরো জঘন্য। কুত্তার জীবনের চেয়েও খারাপ।
রোজ রোজ একগাদা ঘটিবাটি, আসবাব, কাপড়ের গাট্টিতে বসবাস।
ছেলেটা বাজার করে, অফিস করে, রাতের বেলা অন্য সবকিছুর মতো নিয়ম করে বউয়ের সাথে সেক্স করে।
বউটা রান্না করে, চুল বাধে, শাড়ি পরে, মেকাপ ঘষে।
রাতের বেলা বরের বুকে চিড়েচ্যাপ্টা হয়ে আহ উঁহ করে শুধুমাত্র বরকে এটা বুঝাতে যে, সে খুব সুখবোধ করছে।
ধান-চাল, মুড়ি-মুটকি, পাশের ফ্লাটের ভাবি, বান্ধবীর জামাই, ননদের বিয়ে, শাশুড়ির সাথে ঝগড়া, শ্বশুরের থেকে একলাখ টাকা ধার চাওয়া এমন সব থার্ডক্লাস মার্কা কথাবার্তায় জীবন ভরপুর। এই হলো ঘরসংসার।
ওতে সক্রেটিস, রুশো, দেকার্ত, মিশেল, মার্কস, তলস্তয়, দস্তয়ভস্কি, ভলতেয়ার, সার্ত্রে কই?
পৃথিবীশ্রেষ্ঠ সঙ্গীত কই?
কবিতা কই?
উপন্যাস কই?
রাজনীতি কই?
অর্থনীতি কই?
কোনো কাপলদের দেখলাম না মার্কসিজম পাঠ করতে করতে প্রেম করতেছে।
মার্কস সঠিক নাকি বেঠিক, এ নিয়ে ঝগড়া করতে করতে একে অপরের নাকমুখ ভাঙছে।
তলস্তয় পৃথিবীর সেরা সাহিত্যিক, এ যুক্তিকে তুলে ধরতে কোনো প্রেমিকাকে রাত জেগে তর্ক করতে দেখলাম না।
রাত হলেই প্রেমিকারা ব্রেসিয়ার খুলে তাদের প্রেমিকদের মুখে তুলে দেয় ভরাট নিপল।
আর প্রেমিকগুলোও শালা কামুক কুত্তার দল।
যতটুকু দর্শনের পাঠ ইতোপূর্বে নিয়েছিল তা সাইডে রেখে চুকচুক করে নিপল চোষে।
এখানে সুন্দর জীবনবোধ কই?
বিদ্রোহ কই?
চিন্তার মুক্তি কই?
স্বর্গীয় সুষমা কই?
সব কুত্তার মতো, শূয়রের মতো জীবনযাপন করে আর সুখে আহা আহা করে।
শালা খাচ্চরের দলগুলো।