বেশ্যাকন্যা

পর্ব ৫০

সরদার মেহেদী হাসান

প্রকাশিত : এপ্রিল ২২, ২০১৮

হেসে উঠলাম আমি, হা হা হা... আবার পিঠার কথা মনে করিয়ে দিচ্ছ?

মিটমিট হাসতে হাসতে রাতিয়া বলল, কেন, লোভ হচ্ছে?

হা হা হা... না, তোমার পিঠার লোভে পড়তে চাই না।

কেন, এখনই পিঠা খাওয়ার শখ মরে গেল?

না-না, মরবে কেন? ন্যাড়া বেলতলায় সব সময়ই যায়!

আমি জানি, ন্যাড়া বেলতলায় একবারই যায়।

সুযোগ সন্ধানী লোক ঠিকই বারবার যাবে বেলতলা।

আপনে যা বলেন না, আগামাথা নাই।

হা হা হা... কী আর বললাম! একটু কাছে আসো...

কেন? কাছে যাব কেন? দুষ্টামি করবেন?

কেন? কাছে ডাকার মানেই কি দুষ্টামি করা?

তাহলে?

কাছে আসো...

কতটা কাছে?

যতটা আমি আসতে বলছি...

বুকের সামনে গিয়ে দাঁড়াব?

না, তুমি আমার কাঁধের বামপাশে এসে দাঁড়াও।

কি? কাঁধের বাম পাশে দাঁড়িয়ে আমি কি করব?

তুমি কিছু করবে না, শুধু আমার কাঁধের বামপাশে এসে দাঁড়াও। যা করার আমি করব।

হা হা হা... কী যে করেন, ভেবে পাচ্ছি না।

হা হা হা... কোনও কিছুই করতে চাই না। মাপ নিতে চাই।

মাপ? কিসের মাপ?

তোমার ভাবনায় কি বলে? আমি তোমার কিসের মাপ নিব?

বলতে পারব না। আপনার মনের ভিতর তো আমি ঢুকতে পারছি না।

ভাবনা দুয়ার খোলা। ইচ্ছে করলেই ঢোকা যায়। বামে এসে দাঁড়াও।

আচ্ছা, দাঁড়ালাম।

হা হা হা...

হাসেন কেন?

তুমি তো উচ্চতায় আমার কাছাকাছি পৌঁছে গেছ... হা হা হা...

মানে?

মানে হচ্ছে, তোমার চেয়ে সাগর অনেক খাটো।

কি? হা হা হা... এটা বলার জন্য কাছে ডাকলেন?

হ্যাঁ। সবাই বলছে, তুমি অনেক লম্বা দেখে সাগর তোমায় ছেড়ে অন্য মেয়েকে ঘরে তুলেছে।

সবাই কয় মানে? ওই খাটোরে তো আমি দু’চোখে দেখতে পারি না।

তোমরা দুজন দুজনকে ছেড়ে দু’দিকে চলে গেলে কেন?

সে অনেক কথা। এখন বলা যাবে না।

তোমাদের হৃদয়ে কি ভালোবাসা কাজ করে?

আমরা কি মানুষ না?

আমাদের তো তাই মনে হয়।

তা তো মনে হবেই। আপনেরা আমাদের কুকুরের চেয়ে বেশ ঘেন্না করেন, কিন্তু অন্যের আড়ালে আপনারাই কুকুরের মতো ছুটে আসেন আমাদের কাছে।

হা হা হা... দারুণ লাগল তোমার কথাগুলো। মানুষকে চড় মারার জন্য পায়ের জুতা খুলতে হয় না। কখনও কখনও কথার মাধ্যমেও মানুষের গালে জুতার মতো চড় মারে।

মেহেদী ভাই, সিমলার ঘরে যাবেন?

কেন?

সে এখন আমাদের এই বাড়িতেই থাকে।

না না। ওর কাছে এখন যাওয়া যাবে না।

কেন?

কেন? তুমি জানো না?

সিমলার যা মুখ খারাপ, সে তো আপনার কথা অনেক বলে।

কি বলে?

বলে, মেহেদী খুব ভালো ছেলে। কিন্তু ওর সাথে খারাপ কথায় আমি পারি না। আমি যে ভাষায় কথা বলি, সে সেই ভাষাতেই কথার উত্তর দেয়। হা হা হা... আমি মাঝে মধ্যে তার সাথে খারাপ ভাষায় কথা বলতে গেলে নিজেই হাঁপায়ে উঠি।

হা হা হা... সে এমন বলে? সে তো ঝুমুর বাড়ির পাশের বাড়িতে ছিল?

হ্যাঁ। সে যে বাড়িওয়ালীর ঘর ভাড়া করে ছিল, সেই বাড়িওয়ালী তেমন ভালো ছিল না। তার কাছে সিমলার কিছু টাকা লোন থাকাতে এতদিন সে ঘর পরিবর্তন করতে পারেনি। কিছু দিন আগে সে তার লোন শোধ করে সেই বাড়িওয়ালীর ঘর ছেড়ে দিয়েছে। এখন আমাদের এখানেই থাকে।

বাহ! তা হলে ভালো হলো। সে এখন কোথায়?

আমি জানি না। তবে ঘরে আছে কিনা তা দেখে আসি।

 

রাতিয়া সিমলার খোঁজে ঘর থেকে বেরিয়ে গেল। সিমলার বয়স ২০-২২ বছর হবে। দেখতে বেশ সুন্দর এবং আধুনিকতার ছাপ নিয়ে চলার চেষ্টা করে প্রতিনিয়ত। তার মনটা যথেষ্ট সহজ-সরল। সে যা বলে সরাসরি মুখের উপরেই বলতে পছন্দ করে। এতে আমি তাকে যথেষ্ট পছন্দ করি। সে সারাক্ষণ মোবাইলে কথা বলতে পছন্দ করে। প্রতিনিয়ত প্রচণ্ড অশ্লীল ভাষায় কথা বলে এবং মাদক গ্রহণের উপরে রয়েছে প্রচণ্ড আগ্রহ।

 

চলবে