শিমুল বাশারের আত্মগদ্য ‘অ্যালোভেরা মুখে মেখো’

প্রকাশিত : ফেব্রুয়ারি ১৫, ২০২১

সন্ধ্যায় ভদ্রলোকেদের মতো নাস্তা করলে প্রায়ই বিপদে পড়তে হয়। লা.. লা... লালা পি... পি... করতে করতে কাজ সেরে বাসায় চলে আসি। মাঝরাতে ক্ষুধা লেগে গ্যালে তখন মনে পড়ে, হায়! হায়! আমি তো রাতে কিছু খাই নাই। এখন সাততলা থেকে নেমে কোথায় যাব? এখন কী খাবার কিছু পাবো? তার ওপর এত্তগুলা সিঁড়ি বাওয়ার কথা চিন্তা করতেই ক্ষুধাটা আরো বেড়ে যায়। নিজেকে নিয়ে আর পারি না আমি!

আজ মেথিকে বললাম, আমারে একটা অ্যালোভেরা কিনে দিও।
মেথি তো অবাক! জিগেশ করল, অ্যালোভেরা কেন?
বললাম, মুখে দিতে বলছে।
কে দিতে বলসে?
বললাম, এক্স।
মেথি বলে, ও মোর খুদা! মুখে কি হইছে?
বললাম, কার যেন কে মারা গেছে, তাই তার মন খারাপ। মাঝরাতে আমারে তার মনে পড়ছে। কল দিছিলো। জিগায়, কি করো? আমি কইলাম, মুড়ি খাই। সাথে সাথে ভিডিও কল দিয়া বসলো। ভাবছে অ্যাভয়েড করতেছি। মিথ্যা ধরার জন্য কল দিছে। একটুও ট্রাস্ট করে না। বলে, বাইরে থেকে এসে মুখ ধোন নাই। আমি বললাম, ধুইছি কেন? বলে, মুখটা এত ত্যালত্যালা লাগতেছে কেন? আমি কইলাম, লোশন দিছি। সে জিগায়, কি লোশন? আমি লোশনটা দেখাইলাম। সে বলল, এটা তো বডি লোশন। মুখে মাখছেন ক্যান? কে কিনে দিসে এটা? আমি বললাম, মেথি। এরপর সে একটা ক্রীমের কৌটা এনে দেখালো। বলল, এটা মাখবেন। এই দেখেন এভাবে অল্প একটু নিবেন, তারপর এভাবে ঘুরায়া ঘুরায়া মাখবেন। তারপর গালটা আগায়া দিয়া বলে, দ্যাখেন ত্যালত্যালা দেখা যায়? আমি বললাম, না। সে তখন বলে, মেথিকে বলবেন আপনারে এটা কিনে দিতে। আলমাসে পাওয়া যায়।

মেথি বলল, এটা আপনার কয় নাম্বার এক্স?
আমি উত্তর দেই না।
তখন মেথি জানতে চায়, সে তাকে কিভাবে চেনে।
আমি বললাম, চেনে। বলছি তোমার কথা।
কি বলছেন?
বলছি, সে সেপারেশনে যেতে চাইছে, আর পারতেছে না।
মেথি চুপ করে থাকে। একটু পর মেথি জানতে চায়, তারপর?
আমি বললাম, সে জানতে চাইলো, তোমার খোঁজ-খবর ঠিকমতো নেই কীনা। আমি বললাম, নিই তো। এই যে যেমন এখন তোমার খোঁজ নিচ্ছি।

লেখক: কথাসাহিত্যিক ও গণমাধ্যমকর্মী