সত্যজিৎ রায় এখনও সেরা
রিফাত বিন সালাম রূপমপ্রকাশিত : ডিসেম্বর ১৩, ২০১৭
সিনেমায় মাত্র হাত দিয়েছেন তরুণ পরিচালক সত্যজিত্ রায়। ১৯৫৫ সালের ২৬ অগাস্ট মুক্তি পায় তার প্রথম সিনেমা, পথের পাঁচালি। বিভূতিভূষণ বন্দ্যোপাধ্যায়ের উপন্যাস পথের পাঁচালি অবলম্বনে তৈরি হয় এ সিনেমাটি। খুব সরল ধাঁচের, কম বাজেটের এ সিনেমাটি প্রকাশের পর পরই স্থান করে নেয় পৃথিবীর সেরা সিনেমার তালিকায়। যা আজও অটুট আছে। সেই বছর শ্রেষ্ঠ চলচ্চিত্রের জন্য ভারতের জাতীয় পুরস্কার পায় সত্যজিৎ। ৬০ বছর পেরিয়ে গেছে পথের পাঁচালির। কিন্তু এখনও ভারতবর্ষের সিনেমা বলতে বিশ্ব পথের পাঁচালিকেই চেনে।
পথের পাঁচালির নির্মাণকালীন বাজেট ছিল তিন হাজার মার্কিন ডলার অর্থাৎ তৎকালীন মাত্র দেড় লক্ষ ভারতীয় রুপি। সিনেমাতে ছিল না কোনও জনপ্রিয় তারকা। কিন্তু তা সত্ত্বেও সমালোচক আর দর্শকদের প্রশংসার কমতি ছিল না। পরিচালকের দক্ষতার কারণেই এটি সম্ভব হয়েছিল। ১৯৫৬ কান ফিল্ম ফেস্টিভ্যালে বেস্ট হিউম্যান ডকুমেন্ট পুরস্কার পায় এ সিনেমাটি। সে বছর ওসিআইসি পুরস্কারসহ আরও কিছু পুরস্কার আসে সত্যজিৎ এর হাতে। এমনকি জীবনের শেষ সময় অস্কারে বিশেষ সম্মাননা পেয়েছিলেন সত্যজিৎ, যার পেছনে ছিল পথের পাঁচালি।
পথের পাঁচালি থেকেই সৃষ্টি হয় অপু নামের আরেক কালজয়ী চরিত্রের। পরিবর্তীতে অপু ত্রয়ী সিরিজের অপর দুটি ছবি অপরাজিত (১৯৫৬) ও অপুর সংসার (১৯৫৯) মুক্তি পায়। যা বাংলা সিনেমায় যোগ করে নতুন মাত্রা। বাঙালিদের কাছে পথের পাঁচালির দৃশ্যায়ন কোনও মহাকাব্যের থেকে কম কিছু নয়। কাশবনের ভিতরে অপু-দূর্গার সেই ছোটা-ছুটি কিংবা গ্রাম অঞ্চলের সেই শত চেনা দৃশ্যও নতুন করে দর্শকদের মুগ্ধ করে বারবার।
তরুণ পরিচালকদের কাছে পথের পাঁচালি আজও সেরা উদাহরণ। কম টাকায়, অখ্যাত তারকাদের নিয়েই সেরা সিনেমা সম্ভব, সেটাই প্রমাণ করেছিলেন সত্যজিৎ।