হাসান মাহমুদের ৫ কবিতা

প্রকাশিত : জুলাই ০৯, ২০১৯

পথ পরিক্রমা

কিছু পথ হাঁটি কিছু পথ বাকি
কিছু পথ রাখি ব্যাংকে
কিছু পথ ভাঙি কিছু পথ মাঙি
কিছু পথ মাপি র‌্যাঙ্কে।

কত পথ গেলে তার দেখা মেলে
কত পথ শেষে আশ্রয়
কত পথ যেচে কত পথ সেচে
কত পথ হবে সাশ্রয়।

কত পথ ঘুমে কত পথ জেগে
কত পথ আছে ঋণে
কত পথ ধামে কত পথ রামে
কত পথ জল-মীনে।

কত পথে আছে স্বপ্ন ছড়ানো
কত পথে জাল-ধন্ধ
পথ ভুলে পথে জীবনের রথে
পথের আলোতে অন্ধ...

আগুন কানাই

আগুনের দিকে তাকাতেই ধ্যান টের পাই। ছায়াছন্ন পাহাড়-ঝরনার
মতো জল-জোছনায় শরীর ভেজাই আর তামাটে নিঃশ্বাসে তামাক
আনন্দ গিলি হরিদ্রাভ-বৃক্ষালির রোদ সম্মোহনে।

পৃথিবীর মানুষেরা অন্ধকার খেতে খেতে আলোর স্বাদটাকেই
বেমালুম ভুলে যেতে বসেছে যখন আমি তখনই আপেল আনন্দে
গোপিনীদের জরতী সভায় সূর্যের বয়স সম্পর্কিত প্রভাষণ দিতে দিতে
পথ গিলে ফেলি...। তিরিশ পেরোনো মখমল চোখগুলো উদ্ভাসনার
মোহন-বিনয় ঝেড়ে আমারই শব্দ সুষমিত প্রভাষণের তারিফ জুড়ে
দিতেই বুজরুকি জ্ঞানে আমি অদৃশ্য বারান্দাতেই বিলীন
হয়ে যাই। টের পাই ব্রীড়ানত কতিপয় আধবুড়ো চোখ
ধ্যান ভেঙে আমারই রাতটানা পথে অবাক ধ্যানের মত শূন্যে মিলায়।

সজ্ঞানে বিভক্তি মেনে আগুনকে কানে কানে বলি
চলি, গুডবাই বিংশতি আগুন, আমি তোর ভাই।

বৃত্তান্ত

আহা! কবিতার কৈশোর
তুলোর ভ্রমণ
যৌবনে মহামায়া; তুখোর দমন
এইভাবে কেটে যাবে যাযাবর দিন
তোমার কোমল চোখে যাপনের ঋণ...

মনে রেখো

ভ্রুক্ষেপ করি না তোমাদের।
করুণার কোলাহল থেকে
সামান্য দূরেই পান্থশালা! উন্মুখ প্রান্তরে
আমাদের চেয়েও যারা অসহায় মুখ
তাদের নিয়েই হাটি উটপাখি মন
গুঞ্জন, হিসহিস মরু সাহারায়
বিবেক-বাড়ির দিকে চোখ তড়পায়!

মৃত্যুই সত্য জীবন ততোধিক
জেনে রাখো সখাকুল
ভ্রমণে মগ্ন আমি অবিশ্রান্ত ঢেউ চেনা সাহসী নাবিক!

 

পাখিছানা মন

সময় পালকে মুখ লুকোতেই কবিতা মাতাল
পাখিসন্ধ্যায় চোখ মেলতেই মায়াবী উড়াল
মুগ্ধ দু’ঠোঁটে গ্লাস ছোঁয়াতেই পৃথিবী পকেটে
এই দ্বান্দ্বিক কবিতা পাড়ায় কার যাওয়া-আসা?

বাণিজ্য পাড়া উঁকিঝুঁকি মারে তাও তুমি জ্ঞাত
মাতাল পর্দা: ঝাকুনি ছোয়ায় খ্যাতি-প্রলোভন
কণ্ঠনালির বারান্দা জুড়ে ক্যামেরা হাঁটছে
এই সন্ধ্যার জোনাকি-আকাশে কার ছুটোছুটি?

মায়ার ঝরনা ছুঁয়ে গেল মেঘ বিস্ময় ভরে
সন্ন্যাস ভেঙে অভিলাষী মন ছোবেনা ও চুল
মোমের পুতুল নাচে কি তোমার বারান্দা জুড়ে
কবি তা জানে না ব্যাংকিং রীতি হায় বিলকুল!

তবুও কাব্য রোদনপুরের ভরা সন্ধ্যায়
দ্বান্দ্বিক ঠোঁটে পাখিছানা মন
ডাক দিয়ে যায়...