কাজী জহিরুল ইসলামের আত্মগদ্য ‘আমার বিচিত্র জীবন’

তখন প্রায় সন্ধ্যা। দূরে পাহাড়ের কোলে একটি দুটি করে আলো জ্বলে উঠেছিল। চারদিক নিস্তব্ধ, কেবল ফ্রিতি নদীর কুলকুল বয়ে চলার শব্দে বুঁদ হয়ে বসেছিলাম। জুমেরান এসেছিল

মাঠে কত খেলা, কত বন্ধু, কত মান, কত রাগ, কত বিরাগ। ওই মাঠের দখল নিয়ে কত ঝগড়া, কত মারামারি, কত কি। কোথায় হারিয়ে গেল খালের পশ্চিম পাড়ের বিশাল সেই মাঠ

হাইওয়ে ধরে গাড়ি দ্রুত বেগে ছুটছিল। দূরে দূরে পাহাড়ের কোলঘেঁষা বিচ্ছিন্ন জনবসতির আলোগুলি টিমটিম করে জ্বলে আছে। অন্ধকার ছিন্নভিন্ন করে প্রায় উড়ে চলার মতো এই পথ অপরিচিত বোধ হচ্ছিল

প্রস্তাব দিয়ে কি প্রেম হয়? না, প্রস্তাবের তোয়াক্কা করে না প্রেম। প্রেম হয়। হয়ে ওঠে। যেমন হয়ে ওঠে লেখা। কখনো সারাদিন টেবিলে কাগজ-কলম নিয়ে বসে থাকলেও একটি শব্দ লেখা হয়ে ওঠে না

গ্রামের পাশ দিয়ে গ্রামের মতোই আঁকাবাঁকা হয়ে চলে গেছে একটি খাল। খালটি মেঘনায় গিয়ে মিশেছে। কিন্তু এর শাখাগুলো খুব যত্নে কোনো গ্রামকে বঞ্চিত না করে প্রতিটি গ্রামের পাশ দিয়ে গিয়ে ফসলের মাঠে মিশেছে

এই পৃথিবী কখনো খারাপ মানুষের খারাপ কর্মের জন্য ধ্বংস হবে না, ধ্বংস হবে তাদের জন্য, যারা খারাপ মানুষের খারাপ কর্ম দেখেও চুপ করে থাকে।

অনেক সকাল সকাল ঘুম ভাঙে আমার। মিশ্মিকে না জাগিয়েই চা বসাই অভেনে। তারপর এসে দাঁড়াই জানলার পাশে। পর্দা সরিয়ে দেখি বহুদূরে পাহাড়ের রেখা।

আদিম অবাধ যৌনাচার প্রথার ওপর সমাজ বিধি-নিষেধ আরোপ করতে পেরেছিল বলেই মানুষের সমাজ আদিম খোলস ছেড়ে, বন্য-বর্বর জীবন ছেড়ে সভ্যতার জন্ম দিতে পেরেছিল, যে সভ্যতা এখনও বহমান