কাজী জহিরুল ইসলামের আত্মগদ্য ‘আমার বিচিত্র জীবন’

আজ আমার আর সেঁওতির তৃতীয় বিবাহ বার্ষিকী। সেঁওতির সাথে বিয়ের তিন বছর হয়ে গেল, এটা অতিরিক্ত। এতদিনেও আমার সাথে তার স্বাভাবিক সম্পর্ক হলো না। খুব কম দেখা হয়। কোর্ট ম্যারেজ করেছি না যেন খুনের আসামি।

সিসিলিয়া দারুণ একটা মেয়ে। যতই ওকে দেখছি ততই আমি ওর আচরণে মুগ্ধ হয়ে যাচ্ছি। তবে এ বিষয়টাও আমি পরিষ্কার বুঝতে পারছি যে, সে অত্যন্ত প্রফেশনাল। ওর দায়িত্বই হচ্ছে আমাকে আগলে রাখা।

তিনদিন ধরে কানাঅলার মতো ঘুরছি। সাথে জুয়েল, আদিত্য, নবী। নবীর গানের দরাজ গলা কিন্তু তাল, লয় কম। তাই গেয়ে আসর জমায়। আর ওদের সাথে থাকতে হলে একই জলে পা না ডুবিয়ে উপায় নেই। জলে না ডুবেও উপায় নাই।

সিসিলিয়ার মুখের হাসিটা এত সুন্দর কেন? আমি সহ্য করতে পারছিলাম না। মুখে সেই অসহ্য সুন্দর হাসি ধরে রেখেই বলল, আপনি যদি চান তাহলে আজ দুপুরে আপনাদের দেশি রুটি, ভাত এবং চিকেন মাসালা অর্ডার করা যাবে।

আজ কার যেন জন্মদিন! সেঁওতির? কী জানি। আমার নিজের না তো? মনে নেই। বুয়েটের হল থেকে কবে এই ছাপড়া মসজিদের গলিতে এলাম? কতদিন? মাস? একি এই শতাব্দীর ঘটনা?

ঘুম ভেঙে গেল। শরীরটা বেশ ভালোই লাগছে। মাথাটাও বেশ পরিষ্কার। খুব বেশি সময় মনে হয় ঘুমাইনি। চোখ মেললাম। ঘরে আলো জ্বলে উঠলো সঙ্গে সঙ্গেই। ইচ্ছে হলো, কিছুক্ষণ শুয়ে থাকি।

শরীর ও মন দুটোই বেশ হালকা লাগছে। চোখ খুললাম। রুমে আলো জ্বলে উঠলো কয়েক সেকেন্ডের মধ্যেই। আমি একটু চমকে উঠলাম। মনে হলো, আমার চোখের সঙ্গে আলো জ্বলার একটা সম্পর্ক রয়েছে।

ঘুম ভাঙতেই সবকিছু কেমন যেন এলোমেলো মনে হচ্ছিল। এমন তো হয় না কখনও। কেন হচ্ছে? চোখ মেলতেও কষ্ট হচ্ছে খুব। স্বপ্ন দেখছি না তো? অনেক কষ্টে চোখ খুললাম, খুলতে পারলাম। কেমন যেন ধোঁয়াশা ধোঁয়াশা টাইপ লাগছে।