কাজী জহিরুল ইসলামের আত্মগদ্য ‘আমার বিচিত্র জীবন’

যদি বলি, বাংলাদেশ, ভারত, পাকিস্তানের শতকরা ৯৫ জন অধিবাসী সাম্প্রদায়িক তাহলে ভুল বলা হবে না বোধহয়। (খেয়াল করবেন আমি অধিবাসী বলেছি, মানুষ বলিনি। কারণ সাম্প্রদায়িকরা পুরো মানুষ নয়)।

জীবনপঞ্জিতে দেখা যাচ্ছে, ১৮৫৭ সালে ঈশ্বরচন্দ্র বিদ্যাসাগর বর্ধমান, হুগলী, মেদিনীপুর ও নদীয়ায় ৯টি বালিকা বিদ্যালয় স্থাপন করেছেন। আবার সেই বছরই সংস্কৃত কলেজের ১৫০ টাকা বেতনের অধ্যক্ষ পদ থেকে অব্যাহতি চাইছেন।

লেখক-কবি-বুদ্ধিজীবীদের মধ্যে সবাই যে কেবলমাত্র টাকা বা সুযোগ-সুবিধার জন্য নিজের আদর্শ ত্যাগ করেন তা নয়। অনেকেই যতখানি আশা করেন ততখানি মূল্যায়িত না হয়ে ক্ষোভে-অভিমানে-ক্রোধে বিপক্ষ শিবিরে গিয়ে যোগ দেন।

এই দেশে এক ব্যক্তির হাতে সর্বময় ক্ষমতা থাকলে সবাই তার প্রশংসা কারে, তোষামোদ করে। কিন্তু কোনো সিদ্ধান্তে দ্বিমত পোষণ করতে চায় না। তিনি যদি ভেবে নেন তার বুদ্ধিমত্তাকে চ্যালেঞ্জ জানানো হচ্ছে, তাহলেই সর্বনাশ।

আল মাহমুদকে নিয়ে লেখার কোনো ইচ্ছা ছিল না। তবু লিখতে হচ্ছে। প্রথমে আগের একটি পর্বের লেখার রেশ ধরে মনে করিয়ে দিতে চাই, কোনো প্রতিভাবান বা মেধাবী তরুণ লেখক-কবি কোনো অগ্রজ লেখক-কবির ডুগডুগিবাদক হন না।

সৈয়দ মুজতবা আলী ছিলেন কট্টর কমিউনিস্ট-বিরোধী। সেই কারণে বামপন্থীদের কাছে তার রচনার সাহিত্যমূল্য বিন্দুমাত্র কমে যায়নি। জার্মান বিশ্ববিদ্যালয়ের বৃত্তি পেয়ে উচ্চশিক্ষা লাভ করেছেন, সম্মান পেয়েছেন, শিক্ষকদের কাছ থেকে স্নেহ পেয়েছেন

মঞ্চে মাইক নিয়ে গাওয়ার লোক আমি নই। আপন মনে নিজের সাথে গেয়ে চলার লোক। মঞ্চে যে কখনো গাইনি, এমন নয়। কিন্তু সে অভ্যাস বহুদিন হলো গেছে। আর আমি নিজের ভেতর ডুব দিতে থেকেছি কেবল।

সাহিত্য কি মানুষের জীবনের তালিকা থেকে বিলুপ্ত হয়ে যাবে? ইলেকট্রনিক বিপ্লব, স্থূল ভোগবাদিতা, পুঁজিবাদী ব্যক্তিসর্বস্বতা, দেহসর্বস্ব প্রেম, পণ্যদাসত্ব— এইসব কি মানুষের জীবনে সাহিত্যকে অপাংক্তেয় করে তুলবে?