কাজী জহিরুল ইসলামের আত্মগদ্য ‘আমার বিচিত্র জীবন’

সে এত গভীরভাবে ছিল বলেই তার না থাকার শূন্যতাও ছিল। কিন্তু আজ আর নিজেকে তেমন করে ফাঁকা লাগছে না। আজ আর কারো না থাকা নেই আমার ভেতর। যেন গোটাটাই শূন্য হয়ে গেছি আমি।

খন্নানের জমিদার বাড়ির তৃতীয় দিনের সুটিং চলাকালে চা খেতে খেতে সৌমিত্র বাবু এক সময়ে বললেন, খুব শীঘ্র আমার ঢাকায় যাবার সম্ভাবনা আছে। ঢাকায় গেলে যোগাযোগ হবে তো আপনার সঙ্গে? বললাম, অবশ্যই।

রিসোর্ট থেকে সুটিংয়ে যাবার জন্য সবাই গাড়িতে উঠে বসলাম। গতদিনের মতোই আমরা নির্দিষ্ট আসনে বসে পড়লাম। সকাল বেলা প্রধান সড়ক ধরে গাড়ি চলছে। দুদিকে গ্রাম আর ফসলের ক্ষেত।

কালো জলের নিচ থেকে পূর্ণিমার মুখ ভেসে উঠেছে। অনেক রঙিন মাছ তাকে ঘিরে রেখেছে। পূর্ণিমা কিছু বলতে চাইছে। আমরা জলে নেমে একটু কাছে যাব ভাবছি। অমনি আলোর নৌকো ভেসে এলো আমাদের কাছে

বইটা হাতে নিয়ে সৌমিত্র বাবু চলে যাবার পর নব্যেন্দুদা আমার দিকে তাকিয়ে বললেন, চালাকিটা একেবারেই শেখেননি। দেখছি আমার মতোই আপনিও সহজেই মানুষকে শত্রু বানাতে পারেন।

বিরাট এক প্রহসনের মধ্যে আপনার চরিত্রটা কেবলমাত্র হয়ে গেল স্বাভাবিক। সস্তা বিপ্লবী বানিয়ে দেয়া হলো আপনার চরিত্রটিকে। দু চারটা কথা বলে একদল শিশুকে নিয়ে রাতারাতি বিপ্লব করে ফেললেন আপনি।

বিনু দারোয়ান হেসে আরও বলল, `দেখতে পাবে পূর্ণিমাকে, ওপারের নদীতে মাঝে মাঝে। ডিঙি নৌকা চরে ঘুরে বেড়ায় তো!`

সুটিং শেষে আমরা রিসোর্টে ফিরছি। নব্যেন্দুদার গাড়িতে আমরা চারজন। নব্যেন্দুদা সামনের আসনে বসেছেন চালকের পাশে। পিছনে সৌমিত্র বাবু, চিত্রগ্রাহক এবং আমি। সৌমিত্র বাবুর পাশেই মাঝখানের আসনে আমি বসেছি।