কাজী জহিরুল ইসলামের আত্মগদ্য ‘আমার বিচিত্র জীবন’

নমঃশূদ্র সমাজে তখন কবি বলে কেউ ছিল না। আমি প্রথম নমঃশূদ্র কবি। আমার কবিতা লিখতে বহু কষ্ট করতে হয়েছে। বহু অবহেলা সইতে হয়েছে। আমার বই কেউ ছাপতো না। প্রথম ছাপল মীনাক্ষী দত্ত, তার মানে বুদ্ধদেব বসুর মেয়ে

বিনয় মজুমদারের চিন্তার গাণিতিক ব্যাপ্তি, ১৪১৩ সালে ‘অউম’ পত্রিকায় দেয়া সাক্ষাৎকার যা বলেছিলেন, তা থেকে স্পষ্ট হবে, “তোমরা মহাগ্রন্থ শুনেছ কি? পড়েছ কি? জানো কি? পৃথিবীর যত বই আছে, সব বই মিলে আসলে একখানি বই।

গণিত ও কবিতা উভয়েরই যে ব্যাপারে মিল আছে তাহলো, ভাষার মাধ্যমে পরিমাপ ও আঙ্গিকের প্রতি তাদের নিখুঁত হবার প্রচেষ্টা; মাত্রা বা সংখ্যানিরূপণ; সমানতা; ছন্দ; প্রণালি; পুনরাবৃত্তি; অনুক্রম এবং পরিণতি; পৃষ্ঠার ওপরে আঙ্গিক

আমার মনে হয়েছে, গাণিতিক সৌন্দর্য তত্ত্বের ওপর বিনয় মজুমদার গড়ে তুলেছেন তাঁর চারটি সাব-জনারের (sub-genre) কবিতার বনেদ, ‘ফিরে এসো, চাকা’, ‘অঘ্রাণের অনুভূতিমালা’, ‘বাল্মীকির কবিতা’

মাউন্ট এলিজাবেথ হসপিটালে লেভেল ফোরে তেতাল্লিশ নম্বর বেডে আমি বসে আছি। একজন নার্স এসে বেডের সাথে লাগোয়া দেয়ালে লাগানো নামটা খুলে ওখানে `লাহুম` নাম ঝুলায়ে দিয়ে গেল।

আমার কাজেকম্মে সাহায্য করার জন্য যে মহিলাটি থাকে, বর্ধমানের প্রত্যন্ত গ্রামে তার বাড়ি। ভীষণ টক খেতে ভালোবাসে। এর আগে একজন ছিল, বয়স্ক। ঢোকার সময় বলেছিল, ‘কানে একটু কম শুনি।’

আমরা কি আমাদের বাপ-পিতামহদের চিনি? আমরা কি জানি বাংলাদেশে আমরা কাদের তৈরি করে দেওয়া সাহিত্যভিত্তির ওপর দাঁড়িয়ে আছি? নামগুলি উল্লেখ করার সময় আমি তাদের রাজনৈতিক পরিচয় মাথায় রাখছি না।

পৃথিবীতে কেউ কারো নয়, এমন বিশ্বাস নিয়ে বাঁচা ভালো নয়। তবে এ সত্য জানতেই সব থেকে বেশি আঘাত নিয়েছি। শুনেছি দুর্ভিক্ষের সময় নাকি মাও মেয়ের মুখের খাবার কেড়ে খায়। তবে কিসের সম্পর্ক? কেনই বা এত মিথ্যে পূজা?