কাজী জহিরুল ইসলামের আত্মগদ্য ‘আমার বিচিত্র জীবন’

শীতকালে জল স্পর্শ করে কেউ যদি বলে জল ঠাণ্ডা জাতীয় বস্তু, আবার গরম কালে জল স্পর্শ করে কেউ যদি বলে জল গরম জাতীয় বস্তু, তবে কি তার বিচার ঠিক হবে?

দুজন উঠে মাংস বের করতে চলে গেল। ফ্রিজের কাছে দুজনের প্রায় গাঘেঁষা হয়ে দাঁড়াতে হলো। নিতির ভেজা চুলের ঘ্রাণ পাওয়া যাচ্ছে। দীপের শরীরটা কেমন কেমন করছে। নিতিকে ভীষণভাবে জড়িয়ে ধরতে ইচ্ছে করছে।

রাখি যথেষ্ট স্মার্ট। সুন্দরী ও সুগায়িকা। দিদির জন্য মনে মনে পাত্র খোঁজা চলছে। ঠিকঠাক সম্বন্ধ পেলে দিদির বিয়ের সানাই বাজতে দেরি নেই

মেয়েটি আমার দিকে রহস্যময় দৃষ্টিতে একবার মাত্র তাকিয়ে হাঁটতে শুরু করে। কয়েক মুহূর্ত ওর ওই ভিন্ন পথের দিকে তাকিয়ে থেকে আমিও আমার পথে চলতে থাকি। ওই মেয়েটিকে কখনোই আর আমি দেখিনি।

মা ফোন রাখার পর নিতি কিছুক্ষণ মৌন থাকল। নিজের কাছে নিজের কিছু জবাবদিহিতা থাকে। মানুষের ভেতরের আমি, এই বাইরের আমিকে প্রশ্ন করে। তখন শুরু হয় মনস্তাত্ত্বিক দ্বন্দ্ব। ক্রমে সে দ্বন্দ্ব মনের মধ্যে প্রবল ঝড় তোলে।

নিতি ভয় পেয়ে গেল। মা নিতির ভয় পাওয়া মুখ দেখে যা বোঝার ছিল বুঝে নিল। নিতি সজোরে ঘাড় নাড়িয়ে বলল, না, আমি ভাইকে ভালোবাসি। আমি ওকে কাঁদাতে যাব কেন?

ইটি যৌনতা নিয়ে নতুনভাবে ভাবতে শিখিয়েছে দীপকে। দীপের মনোজগতে এক গভীর পরিবর্তন এনেছে। দারুণভাবে রেখাপাত করেছে তাকে। এমনিতেই পুরুষের মন বেপরোয়া হয়। বাঁধাহীন উচ্ছৃঙ্খল হয়।

প্রথম বর্ষার ছোঁয়া পেলে গাছ যেমন সুশ্রী-সতেজ হয়ে ওঠে, প্রথম প্রেমের ছোঁয়া পেয়ে নিতিও তেমন লাবণ্যময়ী হয়ে উঠেছে। স্কুল মাস্টার বাবার মধুর শাসনের ঘেরাটোপ ডিঙিয়ে কোনো ছেলে নিতির প্রেমিক হয়ে উঠতে পারেনি।